করোনা রুখতে মাস্ক ছাড়া গতি নেই। মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। সেই সঙ্গে মাস্ক কিন্তু যথাযথ ভাবে ব্যবহার করতে হবেয হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে কোভিড গ্রাফ। এদিকে মানুষের মধ্যে বিন্দুমাত্র সচেতনতা নেই। সব ভুলে সকলে একসঙ্গে মিলে আড্ডা মারছেন মাস্ক ছাড়াই সেই সঙ্গে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বও। হাজারো বিধিনিষেধ সত্ত্বেও এখনও অনেকে মত্ত পার্টি উৎসবে। কিন্তু মাস্ক পরার কথা বলেই তখন হাজারো বায়নাক্কা। শুধুমাত্র নিজেদের সচেতনতার অভাব থেকেই এবার করোনার এত বাড়াবাড়ি একথা কিন্তু বলছেন অনেক বিশেষজ্ঞই।
বর্তমানে অনেক জায়গাতেই মাস্ক পরা নিয়ে চলছে কড়াকড়ি। কিন্তু এই ভাবে শাসনের ভয় দেখিয়ে মাস্ক ব্যবহার করানো দিনের পর দিন সম্ভব নয়। এছাড়াও এখন অনেকেই পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে মাস্ক বানাচ্ছেন। তবে এই সব মাস্কই কিন্তু কাপড়ের। আর এই মাস্ক কোভিড সুরক্ষায় মোটেই কার্যকরী নয়। তেমনটাই কিন্তু জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের কথা, ডির্পাটমেন্টাল স্টোর থেকে আপনি যত দীম দিয়েই কাপড়ের মাস্ক কিনুন না কেন, কোভিড রুখতে তা কিন্তু মোটেই কার্যকরী নয়।
কোভিড রুখতে মাস্কের ভূমিকা যে গুরুত্বপূর্ণ একথা আগেই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত বছর ডিসেম্বরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( WHO)-এর তরফে জানানো হয়, মাস্ক সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে হবে। যে কোনও মাস্কই যে কোভিডের সুরক্ষা দেবে এমন কিন্তু একেবারেই নয়। সেই সঙ্গে মাস্ক ধুতে হবে, স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে,মাস্ক এদিক-ওদিক রাখা যাবে না। প্রাথমিক ভাবে এই কয়েকটি নিয়ম কিন্তু মেনে চলতেই হবে।
কোভিড কালে বাজারে সবচেয়ে বেশি চাহিদা কুড়িয়েছে মাস্ক। নানা ধরণের মাস্ক যেমন বাজারে এসেছে তেমনই চাহিদা অনুযায়ী প্রচুর তৈরিও হয়েছে। সম্প্রতি সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল থেকে মাস্কের ব্যবহার নিয়ে একটি নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে কাপড়ের মাস্ক কিন্তু করোনা প্রতিরোধে সক্ষম নয়। এমনকী সিন্থেটিক কাপড়ের তৈরি মাস্কও ব্যবহার করবেন না। কাপড়ের ত্রিস্তরীয় মাস্ক তাও চলতে পারে। কিন্তু সবথেকে ভাল হল KN95 কিংবা সার্জিক্যাল মাস্ক। কাপড়ের মাস্ক হাঁচি-কাশির ড্রপলেটকে আটকাতে পারে না কোনও ভাবেই। এমনকী ধুলো আটকাতেও যে সক্ষণ তাও কিন্তু নয়। আমেরিকার মায়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা যেমন বলছেন ত্রিস্তরীয় মাস্ক জীবাণু- ব্যাকটেরিয়া আটকানোর জন্য সবচেয়ে ভাল। আশপাশে এখন অনেক রকম মাস্ক পাওয়া যায়। সঠিক দেখে তবেই কিনুন। মত বিশেষজ্ঞদের।
এছাড়াও একজন মাস্কহীন ব্যক্তি ১৫ মিনিটের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারেন যদি তিনি কোনও কোভিড পজিটিভ ব্যক্তির ৬ ফুট দূরত্বের মধ্যে থাকেন। কাপড়ের মাস্ক মাত্র ২৭ মিনিটের জন্য সুরক্ষা দেয়। সেখানে N95 মাস্ক কিন্তু ২,৫০০ ঘন্টা পর্যন্ত ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখে। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনটাই। কোভিড রুখতে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে চলছে আংশিক লকডাউন। কিন্তু সর্বোপরি মাস্কের ব্যবহার ও সুরক্ষাবিধি না মেনে চলতে পারলে কোনও সমাধানই হবে না বলে মত চিকিৎসকদের।