একটি নতুন গবেষণায় বেশ কয়েকটি সহজ, ব্যবহারিক পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যা পরিবারগুলি নিতে পারে। প্যাসিভ স্ক্রিন টাইম এবং খবর দেখার সময় কমানো, দৈনন্দিন সময়সূচী নির্দিষ্ট রাখা এবং পর্যাপ্ত ঘুম এইগুলি এই প্যান্ডেমিককালে বিশেষভাবে জরুরি। কোভিড প্যান্ডেমিকের সময় যুবকদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপকতা বাড়িয়ে তোলার জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মায়া রোজেন এবং সহকর্মীদের ওপেন-অ্যাক্সেস জার্নাল ‘প্লস ওয়ান’-এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
কোভিড মধ্যবর্তী প্যান্ডেমিক শিশু-কিশোরদের জীবনে অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনেছে।
প্যান্ডেমিকের গতানুগতিক চাপ ছাড়াও আরও অনেকগুলি সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের। যুবকদের মধ্যে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং আচরণগত সমস্যার ঝুঁকি বাড়ছে এই প্যান্ডেমিককালীন পরিস্থিতিতে।
নতুন গবেষণায়, গবেষকরা বৃহত্তর সিয়াটেল এলাকাযর শিশু এবং কিশোর -কিশোরীদের দুটি আলাদা রকমের অনুদৈর্ঘ্য অধ্যয়ন করেছেন। এদের আলাদা আলাদা শ্রেণীতে ভাগ করে এই গবেষণা চালানো হয়।
২২৪ জন যুবক ২০২০ সালের এপ্রিল এবং মে মাসে তাঁদের সামাজিক আচরণ, সাইকোপ্যাথোলজি এবং মহামারী-সংক্রান্ত চাপের মূল্যায়ন করে একটি প্রাথমিক প্রশ্নপত্রের উত্তর তৈরি করেন। এঁদের মধ্যে ১৮৪ জন যুবক ছ’মাস পড়ে একই ধরনের মুল্যায়ন দেয়। এবার এই মুল্যায়নের সময়সীমা হয় ২০২০-এর নভেম্বর থেকে ২০২১ এর জানুয়ারি।
যেহেতু মহামারীর আগে থেকে প্রত্যেক যুবকের তথ্য পাওয়া গিয়েছিল, তাই মহামারী-পূর্ব লক্ষণগুলির বিশেষভাবে খেয়াল রাখা সম্ভব হয়েছিল।
৭ থেকে ১৫ বছর বয়সী এই তালিকায় ৪৭.৮ শতাংশ যুবতী ছিলেন। তাঁরা জাতি ও বর্ণগত দিক দিয়ে সিয়াটেল অঞ্চলেরই বাসিন্দা। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ সাদা বর্ণের, ১১ শতাংশ কালো বর্ণের, ১১ শতাংশ এশিয়ান এবং ৮ শতাংশ হিস্পানিক বা ল্যাটিনো সম্প্রদায়ের ছিলেন।
মহামারী-পূর্ববর্তী চাপের চেয়ে মহামারী চলাকালীন চাপের প্রভাব যে তাঁদের অনেক বেশি ছিল তা এই গবেষণা থেকে জানা যায়। তাঁরা মানসিক ভাবেও অনেক বেশি চাপে ছিলেন।
মহামারীর শুরুতে যেসব যুবক যুবতীরা ফোনের পেছনে কম সময় দিয়েছিল, এমনকি দিনে ২ ঘণ্টার বেশি খবরের মধ্যেই হয়তো থাকেনি তাঁদের মানসিক চাপ মহামারীকালে বেশি ফোন ঘেঁটে বা খবরের মধ্যে থাকা যুবক যুবতীর চেয়ে কম ছিল।
গবেষকরা যে উপসংহারে এসেছিলেন তা হল, “মহামারী চলাকালীন একটি উন্নত দৈহিক রুটিন থাকা, প্যাসিভ স্ক্রিন টাইম ব্যবহার সীমাবদ্ধ করা, মহামারী সম্পর্কে সংবাদ মাধ্যমের এক্সপোজার সীমিত করা বিশেষভাবে প্রয়োজন। খুব কম পরিমাণ সময় কাজে ব্যয় করে বেশি পরিমাণ সময় যদি পরিবার পরিজনের সঙ্গে কাটানো যায় তবে তা খুবই উপকারী হয়ে উঠতে পারে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে।”
আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এই প্যান্ডেমিকে আপনাকে আরও অনেক বেশি যত্নশীল হতে হবে। কারণ, যদি আপনি মানসিকভাবে সুস্থ না থাকেন, সেক্ষেত্রে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকাও আপনার পক্ষে কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: বদহজমের সমস্যা কমায়, ঝরায় অতিরিক্ত মেদও, জেনে নিন আদা চায়ের অন্যান্য গুণ