বায়ুদূষণ কী মারাত্মক রূপ নিতে পারে তা হারে-হারে টের পাচ্ছে দিল্লিবাসীরা। দীপাবলির সময় থেকেই বায়ুদূষণ নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। উৎসবের ঘোর কাটতেই এবং শীতের মরশুম শুরু হওয়ার আগেই দূষণে ঢেকে গিয়েছে দিল্লি। বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় দিল্লির সঙ্গে নাম রয়েছে কলকাতার। বায়ুদূষণের কারণে শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে, এই নিয়ে দ্বিমত পোষণের কোনও জায়গা নেই। কিন্তু যে এখনও ভূমিষ্ঠ হয়নি, তারও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বায়ুদূষণের কারণে। ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গর্ভস্থ শিশু।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বায়ুদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় গর্ভবতী মহিলা, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি এবং ৫ বছরের কম শিশু। পাশাপাশি বায়ুদূষণের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস, চোখ, ত্বক, চুল। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটাও উল্লেখ করেছে যে বায়ুদূষণের কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। তবে, সবচেয়ে আশঙ্কা তৈরি করছে ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণা।
প্রতি ঘন মিলিমিটার বাতাসে হাজার হাজার কালো কার্বন কণা থাকে। এই দূষিত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়া গর্ভবতী মায়েদের জন্য মোটেই ভাল নয়। গর্ভবতী মায়েদের নিঃশ্বাসের মাধ্যনে ওই কার্বন কণা গর্ভস্থ শিশুর কাছে পৌঁছায়। এটি সরাসরি গর্ভস্থ শিশুর উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। সময়ের আগেই জন্ম (premature baby), জন্মের শিশু ওজন কম, ফুসফুসে সমস্যা এবং আরও নানা ধরনের জটিল সমস্যা দেখা দেয়।
গর্ভবতীদের সবসময় ধূমপানের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ ধূমপান সরাসরি শিশুর স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। দূষিত বায়ুতে নিঃশ্বাস নেওয়াও একই সমস্যা তৈরি করছে। বায়ুদূষণ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। বায়ুদূষণ এক্ষেত্রে নীরব ঘাতক। প্রথম দিকে কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা না গেলেও এটি ধীরে ধীরে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে অপুষ্টি, ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি তৈরি করে। পাশাপাশি গর্ভস্থ শিশুর উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।
বায়ুদূষণ যে হারে বেড়ে চলেছে তাতে এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। সুতরাং, দূষণের হাত থেকে বাঁচতে নিজেকে সচেতন এবং সাবধানে থাকতে হবে। হবু মায়েদের N95 মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞেরা। চেষ্টা করুন গর্ভবতী অবস্থায় যতটা বেশি দূষিত বায়ু থেকে দূরে থাকা যায়।