সাধারণত দুটি ঋতুস্রাব চক্রের মধ্যে ২৮ দিনের ব্যবধান থাকে। কিন্তু নানান কারণে বর্তমানে সেটিকে ২৪ দিন থেকে ৩৪ দিন পর্যন্ত সাধারণ সময়সীমা ধরা হয়। তবে, এই মাসিক চক্রের ব্যবধান প্রত্যেক মহিলার ক্ষেত্রে সমান হয় না। যাদের কোনও মাসে দু’বার, কারোর এক-দেড় মাস ছাড়া একবার ঋতুস্রাব কিংবা নিয়মিত ব্যবধান অতিক্রম করার আগেই পরের ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যাওয়ার মত একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণ ভাষায় একে বলা হয় অনিয়মিত ঋতুস্রাব।
বর্তমানে জীবনধারা ও দূষণের কারণে একাধিক মহিলা এই অনিয়মিত ঋতুস্রাবের শিকার। যদিও এর পিছনে জেনেটিক কারণও দায়ী। তবে এমন নয় যে পরিবারে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের ইতিহাস না থাকলে এই সমস্যা হবে না। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে যে, এই সমস্যার হাত থেকে কীভাবে রেহাই পাওয়া যায়।
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার ঘরোয়া উপায়
১) ঋতুস্রাব চক্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পিছনে হরমোন একটি বিশাল বড় ভূমিকা পালন করে। এই হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য যোগাসন করা খুব জরুরি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সব মহিলা প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ব্যায়াম বা যোগাসন করেন তাদের মধ্যে অনিয়মিত ঋতুস্রাব সহ অন্যান্য পিরিয়ড সম্পর্কিত সমস্যাগুলির ঝুঁকিও অনেক কম।
২) ওজন একটি সঠিক ঋতুস্রাব চক্রকে বজায় রাখার ক্ষেত্রে খুব জরুরি। অনেক সময় কম ওজন বা বেশি ওজনের জন্য এই সমস্যা দেখা দেয়। উপরন্ত, এই ওজন অন্যান্য মহিলা জনিত রোগের পিছনেও দায়ী। তাই উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন বজায় রাখুন।
৩) একাধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ঋতুস্রাব জনিত সমস্ত উপসর্গের হাত থেকে রক্ষা করতে সহায়ক আদা। অনিয়মিত ঋতুস্রাব, অত্যধিক পরিমাণে রক্তক্ষরণ, ঋতুস্রাবের সময় হওয়া একাধিক সমস্যা যেমন পেটে ব্যথা, আমাশয় ইত্যাদি উপসর্গকে হ্রাস করতে আদা সাহায্য করে। তাই আদা দিয়ে চা বা যে কোনও খাবারের সঙ্গে আদা খেতে পারেন।
৪) দারুচিনি ঋতুস্রাব চক্রের নির্দিষ্ট ব্যবধান বজায় রাখে। তার সঙ্গে দারুচিনি ঋতুস্রাবের সময় হওয়া ব্যথা ও অত্যধিক পরিমাণে রক্তক্ষরণকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং পিসিওএসের উপসর্গগুলি হ্রাস করে।
৫) শরীরে ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ কম থাকলে অনেক সময় অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়। তাই ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। একই সঙ্গে ভিটামিন বি ঋতুস্রাব চক্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
৬) প্রতিদিন আপেল সাইডার ভিনিগার জলের সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন। একই সঙ্গে খান আনারস। এই দুটি উপাদান আপনার পিরিয়ডের চক্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ঋতুস্রাবের সময় হওয়া একাধিক সমস্যা থেকে রেহাই দেবে।
আরও পড়ুন: অত্যধিক পরিমাণে ঋতুস্রাব হলে কী করবেন বুঝতে পারছেন না? পরিবর্তন আনুন জীবনধারায়!