‘মেয়ে’ থেকে ‘মা’ হওয়ার এই পথটা কিন্তু মোটেই সহজ নয়। সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর একজন মেয়ের জীবনে রাতারাতি বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। আর সেই সব পরিবর্তন, সন্তানের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি কিন্তু মায়েরা (New Mom) ভুলে যান কোথাও গিয়ে তাঁদেরও যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। অধিকাংশ মা কিন্তু নিজের যত্ন নেন না। এমনকী শরীরের কোনও সমস্যা হলেও তা এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতা থাকে। যাঁরা সদ্য মা হয়েছেন তাঁরা যদি কখনও কোনও অস্বস্তি (Breast tenderness) অনুভব করেন তাহলে কিন্তু অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। নইলে সেখান থেকে আসতে পারে একাধিক জটিলতা। কারণ মায়ের থেকেই পুষ্টি (Breastfeeding) পায় সন্তান। মা তাঁর বাচ্চাকে স্তন্যপান করান। আর তাই তাঁর শারীরিক ভাবে ফিট থাকা কিন্তু একান্ত প্রয়োজনীয়।
সম্প্রতি নেহা ধুপিয়া তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় Freedom To Feed- কমিউনিটিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। এই প্ল্যাটফর্মে নেহা পেরেন্টিং বিষয়ে নানা আলোচনা করেন। ব্রেস্টফিডিং নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস এবং তথ্য শেয়ার করেন। আর সেখানেই এবার তিনি কথা বললেন মাস্টাইটিস (Mastitis) প্রসঙ্গে। যে সব মায়েরা সন্তানকে স্তন্যপান করান তাঁদেরই এই সমস্যা বেশি হয়। সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর শরীরে হরমোনগত নানা পরিবর্তন আসে। আর সেখান থেকেই কিন্তু বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যাও আসে।
জন্মের পর প্রথম ৬ মাস বয়স পর্যন্ত যে কোনও শিশুরই প্রধান খাবার হল মায়ের দুধ। আর তাই সন্তানকে স্তন্যপান করানো কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমবার শিশুকে স্তন্যপান করানোর সময় অনেক মায়েরই স্তনে ব্যথা হয়। যদিও সেই ব্যথা ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। অনেকের আবার স্তন বৃন্ত শুষ্ক হয়ে যায়। এমনকী ফেটে ঘা-ও হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে মা তখন বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন না। ফলে তখন হঠাৎ করেই ব্রেস্ট ফিডিং বন্ধ করে দেন। কিছু ক্ষেত্রে মাতৃদুগ্ধের অতিরিক্ত ক্ষরণ হয়। ফলে শিশু তা ঠিকমতো খেতে পারে না।
এইভাবে হঠাৎ করে যদি স্তন্যপান বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে তখন মাসের স্তনে একাধিক সমস্যা দেখা যায়। স্তন লাল হয়ে ফুলে যায়, জ্বালা-যন্ত্রণা থাকে, স্তনের কোশে পুঁজ জমে যায় এবং স্তনবৃন্তে ব্যথা অনুভূত হয়। সেই সঙ্গে জ্বরও থাকে। আর এই সমস্যাই কিন্তু মাস্টাইটিস নামে পরিচিত। মূলত ব্যাকটেরিয়া ঘটিত একটি সংক্রমণ। যা ব্রেস্ট ফিডিং শুরু করার ১ সপ্তাহের মধ্যে আসতে পারে। এই ধরণের কোনও সমস্যা হলে একেবারেই ফেলে না রেখে সত্ত্বর চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। কথা বলুন ল্যাকটেশন কনসালটেন্ট-এর সঙ্গে। এই মাস্টাইটিসের সমস্যা হলে বুকের দুধের পরিমাণও কিন্তু কমতে থাকে। পরবর্তীকালে এখান থেকে স্তনগ্রন্থিতে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়। আর তাই যে সব লক্ষণে সতর্ক থাকবেন-
*স্তনের তাপমাত্রা সাধারণ দেহের তাপমাত্রার তুলনায় বেশি থাকলে
*ত্বকে জ্বালা, চুলকুনি, লাল ভাব থাকলে
*স্তন অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে যাওয়া
*স্তনবৃন্তে ঘা হওয়া এবং স্তনে কোনও মাংসপিন্ডের অনুভূতি
*সন্তানকে স্তন্যপান করানোর সময় তীব্র ব্যথা কিংবা জ্বালাভাব
*সংক্রমণ জনিত সমস্যা, জ্বর ইত্যাদি।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Heart Disease: সাংসারিক কাজ কমাতে পারে বয়স্ক মহিলাদের হৃদরোগের ঝুঁকি! বলছে সমীক্ষা