গরম বাড়ছে প্রতি বছরই। সেই সঙ্গে বাড়ছে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিও। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তাই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ইতিমধ্যে সতর্ক করেছে সকলকে। অতিরিক্ত তাপমাত্রা প্রভাব ফেলে মানবদেহে। কারণ অতিরিক্ত গরমের জন্যেই অনেকে ভুগছেন অনিদ্রায়। রাতের পর রাত কাটছে না ঘুমিয়ে। যার ফল হতে পারে মারাত্মক।একাধিক শারীরিক অসুবিধা থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত তাপমাত্রা জনিত কারণে হিট ক্র্যাম্পের সমস্যাতেও অনেকে ভুগছেন। আসছে অবসাদও। যাঁদের সুগার রয়েছে, হাই প্রেসার রয়েছে বা অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাঁদের মধ্যে অত্যধিক গরম থেকে অবসাদে ভোগার সম্ভাবনাও অনেক বেশি। এছাড়াও গরমে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন শিশু এবং বয়স্করা। আর তাই এই গরমে নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা ভীষণ জরুরি। সেই সঙ্গে বজায় রাখতে হবে ইলেকট্রোলাইটের পরিমাণও। গরমের দিনে ঘাম বেশি হয়। ফলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় খনিজ বেরিয়ে যায়।
গরমে প্রস্রাবের পরিমাণও বেড়ে যায়। যেখান থেকে হঠাৎ করে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এছাড়াও অনেক সময় কিছু ওষুধের প্রভাব থেকেও কিন্তু এই রকম সমস্যা হতে পারে। সাধারণত পরিবর্তিত তাপমাত্রায় সঙ্গে শরীর মানিয়ে নেয়। কিন্তু তাপমাত্রা যদি অতিরিক্ত বেড়ে যায় তাহলে সেখান থেকেও সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত শীত বা গরমের সঙ্গে শরীর মানিয়ে নিতে পারে না। যাঁদের বেশি সময় বাইরে থাকতে হয় তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা সবচাইতে বেশি।
কেন হিট স্ট্রোক হতে পারে মৃত্যুর কারণ
রোদ বা অতিরিক্ত পরিশ্রম থেকে শরীর বেশি গরম হয়ে গেলে ঘাম হয়। এই প্রক্রিয়ায় শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বেরিয়ে গিয়ে শরীর ঠান্ডা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে শরীর খুব বেশি গরম হয়ে গেলে তখন ঘাম হয় না। শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া তখন বন্ধ হয়ে যায়। শরীরের অভ্যন্তরে অতিরিক্ত পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হয় বলেই শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারণ তখন শরীরের যাবতীয় টক্সিন তখন শরীরেই জমা হতে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা খুব বেড়ে গেলে অনেকে প্রলাপ বকতে থাকেন, যা কিন্তু মোটেই সুস্থতার লক্ষণ নয়। তাই জ্বর বেশি বেড়ে গেলে মাথা ধুইয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
ঘুম কম হলেই সেখান থেকে একাধিক সমস্যা হয়। প্রথমেই সেই প্রভাব পড়ে বিপাকে। বিপাক ধীর হলেই শরীর বেশি ক্লান্ত হয়ে যায়। সেই সঙ্গে চাপ পড়ে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গেও। এছাড়াও শরীরে ক্র্যাম্প, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব এই সব উপসর্গও থাকে। তাই যাঁদের হার্টের সমস্যা রয়েছে, শ্বাসকষ্ট জনিত কোনও সমস্যা রয়েছে এবং জায়াবেটিস রয়েছে তাঁদের আগে থেকেই সাবধানে থাকতে হবে। শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে চাপ পড়ে স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও। তাই গরমের দিনে বেশি করে জল খেতে হবে। বারে বারে নুন-চিনির জল খান। এরপরও যদি সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
গরম বেড়ে যাওয়ায় ঠিক সময়ের মধ্যে ঘুমোতে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না তেমনই ঘুমও ভাঙছে তাড়াতাড়ি। কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রতি একটি সমীক্ষা বলছে, জলবায়ু সংকট বিশ্বজুড়ে গড় ঘুমের পরিমাণ ৪৪ ঘন্টা কমিয়ে দিচ্ছে। যে কারণে কমছে গড় আয়ুও।