গ্যাস, অম্বল, পেটের সমস্যায় ভুক্তভোগীর সংখ্যা আজকাল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু এই সমস্য়াটি নিয়ে মানুষ মোটেই ওয়াকিবহল নন। অনেকেই আছেন, যাঁরা নিজেদের মতো করে সমস্য়া সমাধানের চেষ্টা করেন। আবার অনেকের কাছে ভরসা বাজার চলতি অ্যান্টাসিড। কিন্তু কেন এই সমস্যা হচ্ছে তা কেউ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেন না। অজান্তেই শরীরের মধ্যে বাড়তে থাকে সমস্যা। এমনটা একটা সময়ে চিকিৎসকের কাছে যান, যখন হয়ত করার আর কিছুই থাকে না।
সাধারণ ভাবে আলসার কথার অর্থ হল ক্ষত। পরিপাকতন্ত্রে বেশি মাত্রায় অ্যাসিড উৎপন্ন হলে এই সমস্যা বেশি হয়।
পেটে জ্বালা, ব্যথা এবং বমিভাব অনুভূত হলে অনেকেই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন না। তবে এটি হলে এমন নয় যে আপনার আলসার হতে পারে। আলসার এমন এক ধরনের ক্ষত যা খাদ্যথলিতে অ্যাসিডের মাত্রাধিক্যের কারণে ক্ষত তৈরি করে।
অন্য দিকে, সংক্রমণ থেকেও এই রোগ হয়। এইচ পাইলোরি নামে একটি ব্যাকটেরিয়া থেকে সংক্রমণ হয়। এই সংক্রমণের ফলে ক্ষুদ্রান্তের ভিতরে আলসার দেখা দিতে পারে। হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি (Helicobacter pylori) নামক ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণের কারণেও এই রোগ হয়। এই সংক্রমণের লক্ষণগুলি শুরুতে খুব হালকা হয়। তবে হঠাৎ এগুলি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই তাদের লক্ষণগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
স্টমাক আল,সার দুরকমের হয়। গ্যাসট্রিক আলসার আর ডিওডেনাল আলসার। পেটের উপর ঘা হলে গ্যাসট্রিক আলসার আর অন্ত্রের উপর ঘা হলে তা হয় ডিওডেনাল আলসার।
আলসারের প্রাথমিক লক্ষণ
পেট জ্বালা- পেট খালি হলে কিংবা খিদে পেলেই পেট জ্বালা করে। অনেকের ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যেই পেট জ্বালা করে। তবে এই জ্বালা ভাব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। খুব বেশি হলে আধ ঘন্টা।
হজমের সমস্যা- প্রায়শই হজমের সমস্যা হচ্ছে? সামান্য কিছুতেই অ্যাসিড হয়ে যাচ্ছে! হতে পারে আলসারের সমস্যা। বুক থেকে পেট পর্যন্ত যদি জ্বালা ভাব থাকে, তাহলে বুঝতে হবে ইসোফেগাসে অ্যাসিড তৈরি হচ্ছে। আর দিনের পর দিন এই বুকে জ্বালা ভাব বাড়লে কিন্তু সতর্ক হতে হবে।
বমি- স্টমাক আলসারের প্রধান সমস্যাই হল খাবারের মাঝে গ্যাপ পড়লে পেট ব্যথা করা, বমি হওয়া। প্রধানত সকালের দিকে এই সমস্যা বেশি হয়। যাঁদের ঘুম ভাঙলেই খুব বেশি খিদে পায় তাঁদেরও কিন্তু হতে পারে আলসার।
মলের রং পরিবর্তন- প্রস্রাব এবং মল কিন্তু শরীরের অনেক জটিল রোগ সমস্যার জানান দেয়। যদি দেখেন যে মলের রং গাঢ় হচ্ছে, বাদামী হচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে ভেতরে কোনও ভাবে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া- ওজন বাড়া এবং ওজন কমা দুই কিন্তু হতে পারে জটিল কোনও সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ। যদি দেখেন যে দিনের পর দিন ওজন কমছে, খাওয়ার ইচ্ছে চলে যাচ্ছে কোনও কিছুই হজম হচ্ছে না -এসব দেখলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে ওষুধ খেতেও ভুলবেন না। এছাড়াও মেনে চলতে হবে ডায়েট।
আরও পড়ুন: Turmeric Nutmeg Milk: রোজ রাতে হলুদ দুধ খান? মিশিয়ে নিন এক চিমটে জায়ফল! বাড়বে উপকারিতা