মানসিক চাপের জেরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রার মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু যেটা প্রায়শই এড়িয়ে যাওয়া হয় তা হল স্ট্রেসের কারণে ত্বকের সমস্যা। মানসিক স্বাস্থ্য আপনার ত্বকের স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। যখন মানসিক চাপ বাড়তে থাকে, তখন দেহে কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) নিঃসরণ হতে থাকে। এটি সরাসরি ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে এবং প্রদাহ তৈরি করে। মানসিক চাপের জেরে ব্রণ, একজিমা ও সোরিয়াসিসের সমস্যা বাড়তে থাকে। মূলত মানসিক চাপে থাকায় দেহে হরমোনের ভারসাম্যহীনতাই ত্বকের সমস্যা ডেকে আনে, ব্রেকআউটের প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে।
ত্বকের যত্নে ক্লিনজার, ময়েশ্চারাইজার ইত্যাদি ব্যবহার করেন। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকেই সচেতন নন। কর্মক্ষেত্রে চাপ, সংসারেও নানা সমস্যা, ব্যক্তিগত জীবনে নানা চাপ—এসব নানা কারণে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে। কিন্তু সেই মানসিক চাপ যে শরীরে লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে, তা অনেকেরই অজানা। যেমন অত্যধিক মানসিক চাপের জেরে রক্তচাপ বাড়তে পারে, ডায়াবেটিস দেখা দেয়, ওজন ও অনিদ্রার সমস্যা বাড়ে। এগুলো ছাড়াও মানসিক চাপ যে ত্বকের উপর প্রভাব ফেলে তা অনেকেই জানেন না।
মানসিক চাপের সঙ্গে ত্বকের সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রসঙ্গে ডাঃ শুভ্র ভট্টাচার্য, কনসালটেন্ট, অ্যাসথেটিক ডার্মাটোলজিস্ট এবং এএম মেডিকেল সেন্টারের লেজার বিশেষজ্ঞ বলেন, “দীর্ঘস্থায়ী চাপ কর্টিসল, প্রোল্যাক্টিন এবং অ্যাড্রেনালিনের মতো হরমোন নিঃসরণ করে, যা আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্যকে সরাসরি প্রভাবিত করে। এটি ব্রেকআউট, লাল ফুসকুড়ি, চুলকানির মতো নানা সমস্যা ডেকে আনে। এই সব সমস্যাগুলোর চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপে থাকে তাহলে ত্বকের সমস্যা আরও গুরুতর হয়ে ওঠে। যেমন ছত্রাক (urticarial), সোরিয়াসিস (psoriasis), এবং ভিটিলিগো (vitiligo)-এর মতো সমস্যা দেখা দেয়, যা নিয়ন্ত্রণ করা অনেক কঠিন। ত্বকের সমস্যা দূর করতে হলে শুধু ত্বকের যত্ন নিলে চলবে না, মানসিক স্বাস্থ্যেরও খেয়াল রাখতে হবে।”
ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখুন। কাজের চাপ, পারিবারিক সমস্যা, সঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্য এড়ানো যাবে না। তবে, চেষ্টা করুন নিজের মধ্যে মননশীলতা বৃদ্ধি করার। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম করলে, পুষ্টিকর খাবার খেলে, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমোলে সহজেই মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করা যায়। আর এতে ত্বকের সমস্যাও এড়ানো যায় খুব সহজে।