গত দু’বছরে প্রচুর মানুষ কোভিডে (SARs-COV-2) আক্রান্ত হয়েছেন। কোভিড যেমন প্রচুর মানুষের প্রাণ কেড়েছে তেমনবই অনেকেই দীর্ঘ চিকিৎসকার পর জয় করেছেন কোভিডকে। এছাড়াও অনেকেই বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সেরে উঠেছেন। আবার এমনও কিছু মানুষ আছেন যাঁদের শরীরে কোনবও রকম উপসর্গ ছিস না, কিন্তু কোভিড পরীক্ষার পর দেখা যায় তাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষই কিন্তু বুঝতে পারেন না যে তিনি কোভিডে আক্রান্ত। কিন্তু তাঁদের থেকে সংক্রমিত হন অন্যরা। আর যাঁদের দেহে কোনও রকম উপসর্গ থাকে না তাঁদের থেকেই কিন্তু রোগ ছড়ায় সবচেয়ে বেশি।
চিনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সম্প্রতি ২৯,৭৭৬,৩০৬- জনের উপর একটি পরীক্ষা চালান। সেই পরীক্ষার সঙ্গে আরও প্রায় ৯৫টি সমীক্ষার ফলাফল একসঙ্গে যুক্ত করে তাঁরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন। আর সেই সমীক্ষার থ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে উপসর্গবিহীন আক্রান্তের সংখ্যা .২৫ শতাংশ এবং নিশ্চিত ভাবে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০.৫০ শতাংশ।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজি অ্যান্ড বায়োস্ট্যাটিকটিস বিভাগের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, বিশেষ করে সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষদের মধ্যে কিন্তু এই উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আর এঁদের থেকেই ভাইরাস দ্রুত সংক্রমিত হয়। উপসর্গহীনের সংখ্যা বেশি হলেই থেকে যায় কমিউনিটি ট্রান্সমিশনেরক আশঙ্কা। সমীক্ষাটি আরও বেশি নিশ্চিত করার জন্য গর্ভবতী মহিলা, বিমান এবং ক্রুজের কর্মী এবং হাসপাতালের কর্মীদেরও অর্ন্তুভুক্ত করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে ৫৪.১১ শতাংশ মহিলা, বিমানে ভ্রম করেছেন এমন ৫২.৯১ শতাংশ মানুষ এবং নার্সিং হোমের কর্মীদের মধ্যে ৪৭.৫৩ শতাংশ ছিল উপসর্গহীন। যে কারণে বিমানবন্দরেই করোনা পরীক্ষার উপর বিশেষ করে জোর দেওয়া হচ্ছে।
বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং এর সময় যদি কোভিড আক্রান্তকে চিহ্নিত করা যায় তাহলে তাদের কোয়ারানটিন করলে কমতে পারে সংক্রমণের হার। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন কমানোর জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেই গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, ৪০ বছর বয়সের মধ্যে উপসর্গহীনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তরুণ এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হালকা রোগ লক্ষণ ছিল। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, যাঁরা এরকম মৃদু উপসর্গ নিয়ে ঘুরছেন তাঁদের থেকেই কিন্তু বেশি ছড়ায় করোনা। যাঁদের শরীরে ইমিউনিটি কম, বৃদ্ধ বা বাচ্চারা সহজেই সংক্রমিত হতে পারে যদি এরকম মানুষের সংস্পর্শে আসে।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আরও জানান, যাঁরা এই রকম মৃদু উপসর্গহীন তাদের থেকে সংক্রমণ রোধের জন্যই কিন্তু বিশেষ স্ক্রিনিং এর প্রয়োজন রয়েছে। যে সব দেশে এই স্ক্রিনিং সঠিক নিয়ম মেনে করতে পেরেছে তারাই কিন্তু কোভিডের সংক্রমণ রোধে সক্ষম হয়েছে। ইুসর্গহীনদের চিহ্নিত করতে পারলে সংক্রমণ ঠেকানো অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: Omicron: ডেল্টার থেকেও ৭০ গুণ দ্রুত সংক্রমিত হয় ওমিক্রন যদিও তীব্রতা কম, বলছে সমীক্ষা