কোভিডের প্রভাব থেকে এখনও পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেনি বিশ্ব। ওমিক্রনের দাপট কমতে শুরু করলে ফেব্রুয়ারি থেকে নামতে শুরু করে কোভিড গ্রাফ। কমে আক্রান্তের সংখ্যাও। গত মার্চ মাস থেকে ফের কোভিড মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এশিয়া, ইউরোপের কিছু দেশে। চিনে আক্রান্তের সংখ্যা এতটাই বেড়ে যায় যে আবারও লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয় চিন। ওমিক্রনের রিকম্বিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট XE-এখন সংক্রমণ চলাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organization) তরফে জানানো হয়েছে, এই ভ্যারিয়েন্টই হয়তো করোনার সবথেকে সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট হতে পারে। প্রাথমিক যে তদন্ত পাওয়া গিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে এক্সই ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএ.২-র তুলনায় ১০ গুণ বেশি সংক্রামক হতে পারে।
যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের সংক্রমণ যতই হালকা হোক না কেন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সকলেই ভুগেছেন। সেই সঙ্গে কোভিডের ভাইরাস আমাদের জীবনেও এনেছে একাদিক পরিবর্তন। সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে এক ধাক্কায় বয়স বেড়ে গিয়েছে ২০ বছর। ক্লিনিক্যাল মেডিসিনের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, কোভিড ভাইরাস সরাসরি প্রভাব ফেলছে আমাদের মানসিকতায়। যেখান থেকে বয়স বেড়ে গিয়েছে ২০ বছর। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষকরা ৪৫ জন মানুষের উপর এই সমীক্ষা চালান। মূলত ৫০-৭০ বছর বয়সীদের মধ্যে এই সমস্যা সবচাইতে বেশি। সেই সঙ্গে এই বয়সী মানুষদের আইকিউ কমে গিয়েছে ১০ পয়েন্ট। আর যাঁরা কোভিডের প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তাঁদের উপরেও পড়েছে এই প্রভাব। ৫০-এর উপর বয়সে কিন্তু কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা চালিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও কিন্তু দেখা গিয়েছে এই একই সমস্যা। সহজে কথা ভুলে যাওয়া বা কিছু মনে রাখতে না পারা এই সমস্যা কিন্তু দীর্ঘায়িত হয়েছে। এরই পাশাপাশি ক্লান্তি, ঘুমের সমস্যা এসবও কিন্তু ছিল। এই দুর্বলতা থেকেই অনেকের মধ্যে ডিমনেশিয়ার সমস্যাও এসেছে। যাঁদের কোনওদিন এই সব সমস্যা ছিল না তাঁরাও আক্রান্ত হয়েছেন
যাঁদের উপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল তাঁদের নিয়মিতভাবে ৬ মাস অন্তর স্মৃতিশক্তির বিভিন্ন পরীক্ষা চালানো হয়। কিছু জনের ক্ষেত্রে সমস্যার উন্নতি হলে তা সামান্যই। বেশিরভাগের ক্ষেত্রে অবনতি হয়েছে। এমনকী পরবর্তীতে কিছুজনের আংশিক প্রতিবন্ধকতাও এসেছে। যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে স্মৃতিভ্রম, এজিং অনেক দ্রুত আসছে।