আজকাল প্রচুর অফিসেই শিফটিং ডিউটি রয়েছে। কারোর ক্ষেত্রে তা ভোর থেকে শুরু হয় আবার কারোর ডিউটি শুরু হয় বিকেলবেলা থেকে আর তা চলে পরদিন ভোরবেলা পর্যন্ত। কাজের ক্ষেত্রে এই শিফট অনেক আগে থেকেই ছিল, কিন্তু ওয়ার্ক ফ্রম হোমের কল্যাণে তা ইদানিং আরও অনেকটাই বেড়েছে। বাড়ি বসেই সকলে অফিস সামলাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ কাজ করেন অন্যান্য দেশের স্থানীয় সময় অনুসারে। ফলে তাঁদের সে দেশের সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। এছাড়াও ওয়ার্ক ফ্রম হোমে চাপ বেড়েছে কাজের। কাজ শুরু করার নির্দিষ্ট একটা সময় থাকলেও অনেক সময় কাজ শেষ করার কোনও সময় থাকে না। এভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকলে শরীরের আভ্যন্তরীণ ঘড়ির মধ্যে পুরোপুরি ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। কারণ খাওয়া, ঘুমের নির্দিষ্ট কোনও সময় থাকে না।
এই আলো-আঁধারি পরিবেশ আমাদের শরীরের উপর ভীষণ ভাবে প্রভাব ফেলে। সকলেরই একটা নির্দিষ্ট সময় মেনে ঘুমনো জরুরি। আমাদের বডি ক্লকও সেভাবেই অভ্যস্ত। এবার সেই ঘুমে যদি ব্যাঘাত ঘটে তাহলে কিন্তু শরীরের কোনও হরমোনই ঠিকমতো কাজ করে না। আর হরমোন ঠিকভাবে কাজ না করলেই তখন আসে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা। যার মধ্যে রয়েছে ঘুমের সমস্যা, স্থূলতা, হার্টের সমস্যা, ডায়াবিটিস, মানসিক সমস্যা, ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন, বিরক্তি ইত্যাদি।
আর এই বিষয়টি নিয়ে ২০০৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে মোট ১৮ টি গবেষণা চালানো হয়। মোট ১৮,৮০২ অংশগ্রহণকারী ছিল এই পরীক্ষায়। এবং এদের প্রত্যেকরই বয়স ৩৫ বছরের মধ্যে। তাদের প্রত্যেকেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেওয়া হয়েছিল এবং সারাদিনের কাজের সময়কে ৫টা ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। আর এই গবেষণায় বিভিন্ন পেশার মানুষরা ছিলেন। গবেষক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে পুলিশ অফিসার, আইটি কর্মী-সহ একাধিক পেশার মানুষ। এঁদের প্রত্যেকের কাজের সময়, কাজের গুণাগুণ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, কাজের গতি, একাগ্রতা, স্মৃতি, দৃষ্টিশক্তি সব কিছুর উপরই প্রভাব পড়েছে। এর ফলে কর্টিসল আর মেলাটনিন হরমোন কোনটাই ঠিক মতো কাজ করছে না। কিন্তু যাঁরা নির্দিষ্ট সময় মেনে কাজ করেন তাঁদের মধ্যে এরকম কোনও সমস্যা নেই। বরং তাঁদের মধ্যে কর্মদক্ষতাও অনেকটাই বেশি।
দিনের পর দিন রাত জেগে কাজ করায় শরীরে একাধিক সমস্যা এসেছে। কর্মদক্ষতা কম ছাড়াও কাজে ভুল ভ্রান্তি বেশি। মানসিক চাপও বেড়েছে অনেকখানি। আর এভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকলে কাজের গুণগত মান পড়ে যায় অনেকখানিই। নষ্ট হচ্ছে একাগ্রতা। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে কাজ করার মানসিকতাও।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: COVID Surge: হোলিতে কোভিড গ্রাফ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কতটা? ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের