Swine Flu in India: করোনা, মাঙ্কিপক্সের পর এবার সোয়াইন ফ্লু নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ! কারা বেশি আক্রান্ত হবেন, সংক্রমণ এড়াতে কী করবেন?
Swine Flu: সোয়াইন ফ্লু যথেষ্ট বেগ দিতে পারে আক্রান্তকে। এছাড়া নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণীর ব্যক্তির এই সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাঁরা কারা? সংক্রমণ থেকে বাঁচতেই বা কী করবেন? জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।
মহারাষ্ট্রে সোয়াইন ফ্লু রোগে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। মহারাষ্ট্র রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের চলতি বছরের রিপোর্ট অনুসারে সংক্রামিতর সংখ্যাও বাড়ছে ধীরে ধীরে। জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে জুলাই মাসের ২১ তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ১৪২ জন আক্রান্তর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে ৭জন আক্রান্তের মৃত্যুর খবরও মিলেছে। এর ফলে জনগণের মধ্যে কিছুটা হলেও সোয়াইন ফ্লু সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। ২০০৯ সালে এই রোগ আত্মপ্রকাশ করেছিল। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এই অসুখটির নাম এইচ১এন১ ফ্লু। এই ভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জা এ ভাইরাসের মতোই। ফ্লু ভাইরাসের এইচ১এন১ স্ট্রেন থেকে এই রোগের সৃষ্টি হয়। ২০০৯ সালে বিজ্ঞানীরা এই স্ট্রেন ও অসুখটি চিহ্নিত করেন। সেই সময় সমগ্র বিশ্বেই এই রোগের প্রকাপ দেখা গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে শুয়োরের দেহে প্রবেশের পর ভাইরাসটি নিজের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আনে। এরপর তা মানবদেহে প্রবেশ করলে অসুখটি হয়।
সোয়াইন ফ্লু মহামারী কি ফিরছে?
সোয়াইন ফ্লু নিয়ে কি আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু আছে? এই অসুখ কি আগের মতো মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন ‘সোয়াইন ফ্লু’ এখন মরশুমি অসুখ-এর মতোই হয়ে গিয়েছে। শুয়োরের দেহে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস প্রবেশের পর সে নিজের দেহে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটায়। এরপর সেই ভাইরাস মানব দেহে প্রবেশ করলে সোয়াইন ফ্লু-এর উপসর্গ প্রকাশ পায়। শারীরিক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, গলা ব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া ইত্যাদি। অর্থাৎ আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্টে এই ভাইরাস ঘাঁটি গেড়ে বসে।
সোয়াইন ফ্লু হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি
সাধারণত শুয়োরের খামার সামলান বা শুয়োর নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তির এই অসুখ হতে পারে। এরপর সংক্রামিত ব্যক্তি থেকে অন্য সুস্থ ব্যক্তির দেহেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। অতএব এক্ষেত্রেও প্রতিদিন নিয়ম মেনে হাত ধোওয়ার বিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি ব্যাপার। এছাড়া যে কোনও ধরনের সমাবেশে যোগদান এই সময় এড়িয়ে চলা উচিত। বয়স্ক ব্যক্তি ও নানা অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির এই ধরনের সংক্রমণ চট করে হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বয়স্ক ব্যক্তি ও সুগার, প্রেশার, হার্টের রোগী, এবং ইমিউনোসাপ্রেসিভ ড্রাগ সেবন করছেন এমন ব্যক্তিকে সাবধানে থাকতে হবে।
মুশকিল হল, সোয়াইন ফ্লু আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাক্টে বাসা বাঁধলেও, একবার সংক্রমণ জাঁকিয়ে বসলে দেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা কমে যায়। সেক্ষেত্রে দেহের অন্যান্য অঙ্গগুলিতেও অন্যান্য রোগজীবাণু আক্রমণ করতে পারে ও অঙ্গগুলির ক্ষতি হতে পারে।
তাই সংক্রমণ এড়াতে মাস্ক পরা উচিত ও হাত ধোওয়ার বিধি মেনে চলা উচিত।
প্রতিরোধের উপায়
ফ্লু ভ্যাকসিন নেওয়াই হচ্ছে সোয়াইন ফ্লু থেকে রক্ষা পাওয়ার সবচাইতে কার্যকর পদ্ধতি। এছাড়া আরও কিছু পদ্ধতি আছে যেগুলির সঙ্গে কোভিড ১৯ প্রতিরোধের উপায়ের মিল রয়েছে—
• কাশি ও হাঁচির সময় রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে রাখুন। হাত ধুয়ে নিন সাবান ও জল দিয়ে।
• বারবার হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। প্রাদুর্ভাবযুক্ত এলাকায় গেলে কোনও ‘তল’ বা সারফেস (টেবিল, চেয়ার ইত্যাদি)-এ হাত দেওয়ার আগে তা জীবাণুমুক্ত করুন।
• জন সমাবেশে গেলে এলাকায় গেলে মুখ, চোখ, নাকে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
• সাবান ও জল দিয়ে বারবার হাত ধুয়ে নিন। তবে অ্যালকোহল নির্ভর স্যানিটাইজারের ব্যবহারও করতে পারেন।
• ভিড়ভাট্টাপূর্ণ এলাকায় গেলে মুখে মাস্ক পরুন। এছাড়া যতটা সম্ভব শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।