কোভিডে (COVID 19) আক্রান্ত হওয়ার পরেও অনেকে তা ধরতে পারেন না। তার কারণ হল সাধারণভাবে আমাদের ধারণা হয়ে গিয়েছে, কোভিড মানেই তা আসলে জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ (Symptom of COVID 19) নিয়েই প্রকাশ পাবে। অথছ অনেক সময় এই ধরনের উপসর্গগুলি এতটাই মৃদুভাবে শরীরে প্রকাশ পায় যে আমরা কোভিড সন্দেহই করি না! অথচ আমাদের অগোচরেই শরীরে এমন কিছু লক্ষণ দেখা যায় যা আসলে ইঙ্গিত করে, গলাব্যথা, কাশি, সর্দি কাশি আর সাধারণ নেই। বরং তা আসলে কোভিডের উপসর্গ। এমনই একধরনের উপসর্গ দেখা যেতে পারে নখেও। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানবদেহের নখেও (COVID in Nails) কোভিডের উপসর্গ প্রকাশ পায় অদ্ভুতভাবে।
কীভাবে কোভিড নখে প্রভাব ফেলে?
সমীক্ষা অনুসারে ২০ শতাংশ কোভিড রোগীর কিউটেনিয়াস ম্যানিফেস্টশন ঘটে! একাধিক কোভিড রোগীকে পরীক্ষা করে তাদের নখে এমন ধরনের অস্বাভাবিকত্ব নজরে এসেছে। ৬১টি গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, কোভিড সংক্রমণের প্রভাবে সংক্রামিতর নখে শৈত্যজনিত ক্ষতের মতো ক্ষত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আরও অনেকগুলি স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, কোভিড আক্রান্তের নখে সাদা শায়িত রেখা এবং খাঁজ তৈরি হওয়ার মতো উপসর্গ। এই ধরনের সমস্যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে লিউকোনিকিয়া এবং বিউ লাইনস।
লক্ষণ
১) হাত ও পায়ের আঙুলের নখে অনুভূমিক খাঁজ।
২) আঙুলের সব নখে সাদা শায়িত দাগ।
৩) নখে কমলাবর্ণের বিবর্ণ দাগ।
৪) লাল-বেগুনি বর্ণের ব্যান্ডের মতো দাগ।
৫) হাতের আঙুল, পায়ের আঙুলে জ্বালা এবং চুলকানি।
৬) পায়ের আঙুলে ঝিনঝিনে ভাব।
৭) হাতের আঙুলে অস্বাভাবিকরকমভাবে চামড়া উঠে যাওয়া।
নখে সবচাইতে অবাক করা লক্ষণ কোনটি?
উপরিউক্ত সমস্ত লক্ষণের মধ্যে, রক্তবর্ণ অর্ধচন্দ্রের মতো লক্ষণ সবচাইতে বিস্ময় জাগায়। এই উপসর্গের ক্ষেত্রে লাল অথবা বেগুনি রঙের অর্ধেক আংটির মতো নকশা তৈরি হয় কোভিড আক্রান্তের নখের গোড়ায়। তবে নখে কেন এমন সমস্যা তৈরি হয় তার কারণ সম্পর্কে এখনও পুরোপুরি জানা সম্ভব হয়নি। কোনও কোনও গবেষক বলছেন, সংক্রমণের কারণে রক্তবাহী নালিকার ক্ষতিই এই ঘটনার পিছনে দায়ী থাকতে পারে। অন্য একটি বিশ্লেষণ বলছে, সংক্রমণের কারণে নখে ছোট ছোট রক্ত জমাট বাঁধার মতো লক্ষণও তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেখান থেকেও নখ বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে।
তবে রক্তবর্ণ অর্ধচন্দ্রাকার নকশা অল্পই দেখা যায়। সুতরাং কোনও ব্যক্তির নখে এমন লক্ষণ দেখা যাওয়ার অর্থ হল ওই ব্যক্তির কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সত্যি হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির আরটি পিসিআর করা দরকার। সেক্ষেত্রে কোভিড সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যাবে ও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।