জন্মে কোনওদিন যোগা করেননি অথচ চান শরীর হয়ে উঠুক মিলিন্দ সোমনের মতো টগবগে কিংবা শিল্পা শেঠির মতো ছিপছিপে! এদিকে সংসার, বাচ্চা আর অফিস সামলে চেহারা ক্রমশ আলুসেদ্ধর মতো হয়ে উঠছে? জিমে (Gym) যাওয়ার চিন্তা মাথায় আসলেও তা পাশে সরিয়ে রাখতে হচ্ছে সময়ের অভাবে? অথচ ধীরে ধীরে শরীর থেকে চনমনে ভাবটাও চলে যাচ্ছে? ঘটছে উৎসাহের অভাব? তাহলে আর চিন্তা নেই। এবার চলে এসেছে ‘চেয়ার যোগা’ (Chair Yoga)। অফিসে বা ঘরে যে কোনও সময় চেয়ারে বসে করা যাবে এই যোগাসন (Yogasan)। যোগাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেহের ভঙ্গীমা সঠিক রাখতে, শরীর স্প্রিং-এর মতো নমনীয় করতে, দেহের ভারসাম্য রক্ষা করতে চেয়ার যোগার জুড়ি নেই। সবচাইতে বড় কথা যে কেউ করতে পারেন এই যোগা। এমনকী যাঁরা বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন, চলাফেরা সীমিত হয়ে পড়েছে তারাও অনায়াসে করতে পারেন যোগা!
কীভাবে? দেখা যাক—
চেয়ার স্পাইনাল ট্যুইস্ট(অর্ধ মৎস্যাসন): হাতল ছাড়া চেয়ার নিন। চেয়ারে হেলান দেওয়ার অংশটি রাখন শরীরে বাম পার্শ্বে। এবার চেয়ারে টানটান হয়ে বসুন। হাত দিয়ে পিঠে হেলান দেওয়ার জায়গাটি ধরে রাখুন। ওই অবস্থাতেই বাম দিকে তাকান। এবার শ্বাস নিতে নিতে শিরদাঁড়া সহ গোটা দেহ ডানদিকে বেঁকান। নিজের পাও একই ভাবে ডান দিকে ঘোরান। শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ফের সোজা হয়ে বসুন। ব্যায়ামটি উলটোভাবেও পাঁচবার করুন। যতটুকু পারবেন ততটুকু করবেন। বেশি চাপাচাপি করতে যাবেন না।
চেয়ার গড়ুরাসন: হাতল ছাড়া চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। এবার ডান থাইয়ের উপর বাম থাই চাপিয়ে বসুন। সম্ভব হলে বাম পা দিয়ে ডান পায়ের ডিম পেঁচিয়ে নিন। এবার একইভাবে ডান হাত দিয়ে বাম হাত জড়িয়ে নিন দুই তালু জুড়ে ফেলুন। সম্ভব হলে এবার কনুই ভাঁজ করে নমস্কারের ভঙ্গী করুন। এই অবস্থায় পাঁচবার শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। এবার পা ও হাত উল্টো অবস্থানে রেখে ব্যায়ামটি ফের অভ্যেস করুন।
চেয়ার পিজিয়ন: হাতল ছাড়া চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। ব্যাকরেস্ট-এ হেলান দেবেন না। হাতের অবস্থান থাকবে শরীরের দুই পাশে। এবার ডান পায়ের গোড়ালি তুলে বাম পায়ের থাইয়ের উপর রাখুন। টানটান হয়ে বসবেন। বাম হাত থাকবে ডান পায়ের গোড়ালিতে ও ডান হাত থাকবে ডাম পায়ের হাঁটুতে। কনুই ভাঁজ করে মাথা সহ দেহ সামনে সামান্য ঝুঁকিয়ে নিন। এইভাবে পাঁচবার শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। ব্যায়ামটি বাম পা ডান পায়ের থাইয়ের উপর রেখেও অভ্যেস করুন একই সময় ধরে।
কী উপকার?
যাঁরা প্রথম ব্যায়াম শুরু করছেন বা যোগাসন শুরু করছেন তাঁদের জন্য চেয়ার যোগা আদর্শ। এছাড়া যাঁরা সারাজীবনেও বায়াম করেননি অথচ শরীরের নানাবিধ সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও চেয়ার যোগা দুর্দান্ত কার্যকরী। আলাদা কোনও খরচ নেই। প্রথম প্রথম সারাদিনে মাত্র ১০ মিনিট সময় ব্যয় করলেই ভালো সুফল মেলে। আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেলে যোগাসনে আরও কিছুটা সময় দেওয়া যায়। এই ব্যায়ামে দুশ্চিন্তা কমে, ভালো ঘুম হয়। পেশির জোর বাড়ে। সুগার-প্রেশার কন্ট্রোলে দারুণ উপকারী।