বেশির ভাগ মানুষই দাঁতের ব্যথা, মাড়ির ফোলাভাব, জ্বালাভাব এই ধরণের দাঁতের সংক্রমণকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এই ধরণের সংক্রমণ থেকে হৃদ রোগ ও ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ায় সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দাঁতের সংক্রমণ থেকে তা চোখ এবং মুখে ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যাতে দাঁতের কোনও রকম সংক্রমণ না হয় এবং দাঁত যাতে সুস্থ থাকে, এখানে কিছু ঘরোয়া উপায় দেওয়া হল। এই ঘরোয়া উপায় গুলি নিয়মিত অনুসরণ করলে আপনি দাঁতের সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।
নুন জল দিয়ে গার্গেল বা মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। এতে যেকোনও ধরণের মৌখিক সমস্যার সমাধান হবে। এক বা দু কাপ গরম জলে এক থেকে দেড় চামচ নুন মিশিয়ে কুলকুচি করতে পারেন। এর ফলে সংক্রমণ ও মুখের আলসারের সম্ভাবনা কমে যায়। পাশাপাশি দাঁতের যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। যদি সমস্যা বেশি থাকে তাহলে দিনে দু থেকে তিনবার নুন জলে কুলকুচি করতে পারেন।
অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণে সমৃদ্ধ বেকিং সোডা আপনার রান্না ঘরে সহজেই পাওয়া যাবে। এটি দাঁতের সংক্রমণকে প্রতিরোধ করতে এবং দাঁতের হলুদ দাগ দূর করতে সাহায্য করে। জলের সাথে বেকিং সোডা দিয়ে পাঁচ মিনিট তা দিয়ে ব্রাশ করলেই দূর হয়ে যাবে দাঁতের যাবতীয় সমস্যা।
অরিগ্যানো এসেন্সিয়াল অয়েল যেমন শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে, তেমনই প্রভাব ফেলে দাঁতের স্বাস্থ্যেরও। অরিগ্যানো এসেন্সিয়াল অয়েলের মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা মাড়িতে হওয়া ফোঁড়া, জ্বালাভাব, ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। দু ফোঁটা অরিগ্যানো এসেন্সিয়াল তেলের সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে প্রভাবিত জায়গায় লাগান। এতে কয়েক দিনের মধ্যেই আপনি ব্যথা, যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাবেন।
দাঁতে খুব বেশি যন্ত্রণা হলে ত্বকের ওপর দিয়ে বরফের সেক দিতে পারেন। কয়েক টুকরো বরফ তোয়ালে মুড়ে প্রভাবিত এলাকায় ত্বকের ওপর দিয়ে সেক দিন। প্রয়োজনে খেতে পারেন মেথির চা। মেথির মধ্যে জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা প্রাচীনকাল থেকে সংক্রমণ প্রতিরোধে ঘরোয়া উপায়ে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক কাপ গরম জলে মেথি ফুটিয়ে বা মেথি গুঁড়ো মিশিয়ে প্রভাবিত এলাকার ওপর লাগান। এই উপায়টি আপনি দিনে তিন থেকে চারবার করলেই দূর হয়ে যাবে আপনার দাঁতের সমস্যা।
আমরা হয়তো অনেকেই জানি দাঁতের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে লবঙ্গ ভীষণ কার্যকরী। লবঙ্গের মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। লবঙ্গ জলে কুলকুচি করা থেকে শুরু করে গোটা লবঙ্গকেও মুখের ভিতর রেখে দিতে পারেন। লবঙ্গের তেল দাঁতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সহায়ক। ঘা, ফোঁসকা বা আলসারের মত সমস্যার ক্ষেত্রে প্রভাবিত এলাকায় লবঙ্গের তেল লাগাতে পারেন। ব্যথা দূরীকরণে এবং জীবাণুনাশক হিসাবে রসুনের ব্যবহারও অপরিহার্য। একটি রসুনকে থেঁতো করেও প্রভাবিত এলাকায় লাগাতে পারেন।
দাঁত বা মাড়ির যেকোনও সমস্যা বাড়াবাড়ি হয়ে গেলে বা সংক্রমণ ছড়িয়ে গেলে ততক্ষণা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই ধরণের সমস্যা থেকে ক্যান্সার হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘরোয়া উপায়ে রেহাই পান যৌনাঙ্গের ইস্ট সংক্রমণ থেকে!