Ayurveda: দাঁড়িয়ে নাকি বসে, খাওয়ার আগে নাকি পরে? কীভাবে জল পান করলে দূর হবে সব কঠিন রোগ

Rules For Drinking Water: প্রতিদিন পর্যাপ্ত মাত্রায় জলপান না করলে শরীরে তরলের ভারসাম্যের অভাব দেখা দেবে। শরীরে তৈরি হবে জলশূন্যতা।

Ayurveda: দাঁড়িয়ে নাকি বসে, খাওয়ার আগে নাকি পরে? কীভাবে জল পান করলে দূর হবে সব কঠিন রোগ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 28, 2022 | 11:11 AM

হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন একযোগে তৈরি করে জল (Water)। যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির শরীরের ৬০ শতাংশ তৈরি হয় জল দিয়ে। এমনকী আমাদের ওজনের তিনভাগের দুইভাগই জল। জল পান (Drinking Water) না করলে কয়েকদিনের মধ্যেই প্রাণহানি ঘটে। দেহের প্রতিটি অঙ্গ ও কোষের নানা কার্য সম্পাদিত হয় জলের সাহায্যে। স্যালাইভা তৈরিতে, অস্থিসন্ধিতে পিচ্ছিল তরল উৎপাদনে, নানা পাচক রস উৎপাদনে প্রয়োজন হয় জলের। এছাড়া আমাদের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয় ঘাম নির্গমনের মাধ্যমে। ঘামের উৎসই হল জল। এমনকী অন্ত্রে মল নরম রাখতেও দরকার হয় জলের। এই কারণে জল কম পান করলে কনস্টিপেশনের সমস্যা হয়। আমাদের শরীরে মূলত দুইভাবে জলের প্রবেশ ঘটে। ক) খাদ্য মারফত। খ) সরাসরি জলপানের মাধ্যমে। তবে আমরা তরল নানা খাদ্যের মাধ্যমেও শরীরে জলের জোগান বজায় রাখি।

উদাহরণ হিসেবে চা, দুধ, স্যুপ, ফলের রসের কথা বলা যায়। তবে অ্যালকোহল কোনওভাবেই শরীরে জলের জোগান দেয় না। অ্যালকোহল ডাইইউরেটিক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ শরীর থেকে জল বের করে দেয় অ্যালকোহল। প্রতিদিন পর্যাপ্ত মাত্রায় জলপান না করলে শরীরে তরলের ভারসাম্যের অভাব দেখা দেবে। শরীরে তৈরি হবে জলশূন্যতা। জলশূন্যতা তীব্র হলে রোগীর প্রাণ নিয়েও টানাটানি পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বলে গ্যালন গ্যালন জল পানের দরকার নেই। জল পান করুন সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারাদিনে জল পান সকলেই করেন। তবে জল পান করার নিয়ম রয়েছে। সঠিক উপায়ে জল পান না করলে সেরা উপকার মেলে না।

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, জল পান করুন নিয়ম মেনে—

• দাঁড়িয়ে নয়, বসা অবস্থায় জল পান করুন।

• গল গল করে জল পান করবেন না বা সরাসরি গলায় জল ঢালবেন না। চুমুক দিয়ে অল্প অল্প করে জল পান করা উচিত।

• ঘরের উষ্ণতায় থাকা জল পান করুন। ফ্রিজ থেকে নিয়ে সরাসরি ঠান্ডা জল গলায় ঢালবেন না। জঠরের পাচক অগ্নিকে স্তিমিত করে দেয় ঠান্ডা জল।

• মাটির কুঁজো বা তামার পাত্র কিংবা স্টিলের পাত্রে পানীয় জল সঞ্চয় করুন। কল খুলে জল পান করবেন না। সবসময় জল একটি পাত্রে রেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর সেখান থেকে নিয়ে জল পান করা উচিত। সেক্ষেত্রে জলে থাকা অপদ্রব্য পাত্রের নীচে থিতিয়ে যাবে।

• পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে জল ফুটিয়ে পান করতে পারেন। তবে ফোটানোর সময় খেয়াল রাখবেন, যে মাত্রার জল নিচ্ছেন তা যেন ফুটে তিনভাগের একভাগ হয়ে যায়।

• সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এক গ্লাস ঈষদুষ্ণ জল পান করুন।

সারাদিনে কতটা জল?

আয়ুর্বেদ মতে জলকেও হজম করার দরকার পড়ে। তাই জল পানের সময় সেই জল শুদ্ধ কি না তার দিকে নজর রাখুন। সারদিনে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের আড়াই থেকে তিন লিটার জল পান করার দরকার। সহজ হিসেবে সারাদিনে ৮ গ্লাস। এখন প্রশ্ন হল একজন ব্যক্তি কীভাবে বুঝবেন যে তিনি কম জল পান করছেন? এক্ষেত্রে শারীরিক কিছু লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখতে

• ঘাম কম হচ্ছে? • কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিচ্ছে? • মুখগহ্বর শুকনো লাগছে? • ইউরিন গাঢ় হলুদ বর্ণের হচ্ছে? — এমন হলে বুঝতে হবে আপনি সারাদিনে কম জল পান করছেন।

খাবার খাওয়ার আগে না পরে জল?

খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে জল পান করুন। বাতদোষের রোগীর উচিত খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পরে জল পান করা। অন্যদিকে স্থূলকায় কফ দোষের রোগীর উচিত খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে জল পান করা।

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা এও বলছেন, গ্রীষ্মকাল ছাড়া বাকি সব ঋতুতে জিরা দিয়ে জল ফুটিয়ে তারপর ঈষদুষ্ণ অবস্থায় পান করতে পারলে বিশেষ উপকার মেলে। হজমতন্ত্রের সঙ্গে সার্বিক স্বাস্থ্যেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন অভ্যেসে।