জন্ডিস লিভারের রোগ। তাই একবার জন্ডিসে আক্রান্ত হলে লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়। অত্যধিক মদ্যপান, লিভারের ইনফেকশন, লিভার সিররোসিস, হেপাইটাইটিস ইত্যাদির কারণে জন্ডিস দেখা দেয়। জন্ডিসে আক্রান্ত হলে ত্বকের ও চোখের রং হলুদ হয়ে যায়, প্রস্রাবের রং বদলে যাওয়া, গ্যাস-অম্বল, পেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। নবজাতক থেকে শুরু করে ৮০ বয়সের বৃদ্ধ, যে কারও জন্ডিস হতে পারে। যদিও নবজাতকের জন্ডিস হলে, তার ক্ষেত্রে ডায়েটে নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। সঠিক চিকিৎসাধীন থাকলেই তারা সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু কোনও তরুণ বা মধ্যবয়সী কেউ জন্ডিসে আক্রান্ত হন, বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায়, তাহলে ডায়েটের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়।
বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে আপনার সম্পূর্ণরূপে বেড রেস্ট নিতে হবে। পাশাপাশি কয়েকদিন তরল জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে হবে। এই সময় কী খাবেন আর কোন কোন খাবার এড়িয়ে যাবেন, রইল টিপস।
স্যুপ: শরীর খারাপ হলে খাবার খাওয়ার প্রতিও অরুচি তৈরি হয়। জন্ডিসে তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ বেশি দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আপনি পাতলা মাছের ঝোল, চিকেন স্টু খেতে পারেন। এছাড়াও সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপ পান করতে পারেন। এসব ধরনের খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ কম কিন্তু এগুলো আপনার দেহে পুষ্টি প্রদান করে।
ফল ও সবজির জুস: জন্ডিসের সময় ফল ও সবজির রস পান করা সবসময় ভাল। এগুলো জন্ডিসের জটিলতা ও হজমের সমস্যা থেকে আপনাকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফল হিসেবে আপনি কমলালেবু, পেঁপে, আপেল, বেরির তৈরি জুস পান করতে পারেন। এগুলোর মধ্যে ভিটামিন সি, কে ও বি রয়েছে। একইসঙ্গে, সবজি হিসেবে কাঁচলঙ্কা, গাজর, ব্রকোলি খেতে পারেন। এসব খাবার লিভারে জমে থাকা সমস্ত দূষিত পদার্থ দূর করে দিতে সাহায্য করে।
জল: জলের বিকল্প কিছু নেই। জন্ডিস হলে প্রচুর পরিমাণ এজল পান করুন। জল লিভারে জমে থাকা সমস্ত দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। প্রয়োজনে আপনি জলের মধ্যে পাতিলেবুর টুকরো, শসা, পুদিনা পাতা মিশিয়ে ইনফিউজড ওয়াটার বানিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া ডাবের জল পান করতে পারেন। জন্ডিসে ডাবের জল দারুণ উপকারী।
প্রোটিন: প্রোটিন মাংসপেশি গঠনে এবং কোষ পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। তাই ডায়েটে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার আপনাকে রাখতেই হবে। এটি নতুন কোষ গঠনেও সাহায্য করবে। পাশাপাশি জন্ডিসের সময় শরীর দুর্বল হয়ে যায়। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে আপনি কাজ করার এনার্জি পাবেন। তাই খাদ্যতালিকায় রাখুন ডাল, পনির, মুরগির মাংস।
ফাইবার: ডায়েটের মধ্যে ফ্যাট-দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে, যা হজমের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি লিভার থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। পাশাপাশি লিভারের সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে আপনি আমন্ড, বেরি, গোটা শস্য খেতে পারেন।