কাজের চাপ যে ভাবে বাড়ছে তাতে রক্তচাপের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। স্বাভাবিকের তুলনায় রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া মোটেই কাজের কথা নয়। নিয়মিত রক্তচাপ যেমন পরীক্ষা করাবেন তেমনই প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চলবেন। দরকারে প্রেশারের ওষুধ খেতে হবে। এই ওষুধ যেমন নিজের থেকে বন্ধ করা যায় না তেমনই কিন্তু নিজে থেকে ওষুধের ডোজও ঠিক করা যায় না। তবে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুধু ওষুধ খেলেই হবে না, নজর রাখতে হবে রোজকার ড়ায়েটেও। রক্তচাপ বাড়লে সবথেকে বেশি চাপ পড়ে রক্তনালীর অভ্যন্তরীণ দেওয়ালে। সেই কারণেই তৈরি হয় সমস্যা। খুব কম বয়সীদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে রক্তচাপের সমস্যা। যে কারণে বাড়ছে হার্ট অ্যার্টাকের মত প্রাণঘাতী রোগ।
ভারতেও দিন দিন বাড়ছে উচ্চরক্তচাপের সমস্যা। ১২০/৮০ এর বেশি হলেই কিন্তু বুঝতে হবে প্রেশারের সমস্যা রয়েছে। ১৪০ হলেই সতর্ক করা হয়। আর যখন তা ১৮০ তে গিয়ে ঠেকে তখন কিন্তু বুঝতে হবে সমস্যা গুরুতর। প্রেশার আপন খেয়ালে বাড়তে থাকলেও তার আলাদা কোনও লক্ষণ থাকে না। দুর্বল লাগা, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, হঠাৎ রেগে যাওয়া কিংবা অতিরিক্ত গরম লাগা এই সব সমস্যা মুখ্য। কিন্তু হঠাৎ স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হলে প্রেসার বেড়ে যায় অনেকটাই। আর প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে রোজকার জীবনযাত্রা ও ডায়েটে আনতে হবে পরিবর্তন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেই প্রতি বছর এই ১৭ মে দিনটি পালন করা হয় বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবস হিসেবে। মানসিক চাপও মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় বেশি। পাশাপাশি উল্টোপাল্টা খাবার খাওয়া, কোনও রকম শরীরচর্চা না করা এসব তো আছেই।
প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে সব খাবারের উপর জোর দিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা…
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল- পরিবারের অন্দরে যদি রক্তচাপের সমস্যা থাকে তাহলে আগে থেকেই সচেতন হতে হবে। খেতে পারেন টক জাতীয় ফল। রোজ একটা করে লেবু বা মুসাম্বি লেবু খেতে পারলে কিন্তু উপকার পাবেন। এছাড়াও লেবুর মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ। মুসাম্বির জুস বানিয়ে খান। খেতে পারেন ফ্রুট স্যালাডও।
ধনে পাতা- ধনে পাতা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। বাড়ির কিচেন গার্ডেনেই লাগিয়ে নিন ধনেপাতা। তবে ধনেপাতার বড়া নয়, স্যালাড কিংবা তরকারিতে খেলেই এর উপকার বেশি।
চিয়া সিডস- যে কোনো রোগ সমস্যায় আজকাল যেন অমৃতের মত কাজ করে চিয়া সিডস। এক গ্লাস চলে দু চামচ চিয়া বীজ ভিজিয়ে খেতে পারেন। এতে কোলেস্টেরল, রক্তশর্করা সবই থাকে নিয়ন্ত্রণে। গরম জলে আদা থেঁতে করে ফেলে ছেঁকে নিয়ে সেই জল খেতে পারলেও কিন্তু ভাল উপকার পাবেন। এছাড়াও খেতে পারেন ফ্ল্যাক্স সিডস। ওটসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারলেও কিন্তু অনেক উপকার হবে।
ব্রকোলি- ব্রকোলির মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভিনয়েডস। এছাড়াও ক্যালোরির পরিমাণও কম। ব্রকোলির মধ্যে থাকা এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের জন্য খুব ভাল। রক্তনালীর আশপাশে ফ্যাট জমতেও দেয় না।
পেস্তা- ব্লাড প্রেসারের সমস্যা থাকলে রোজ ৩টে করে পেস্তা বাদাম খান। এই বাদাম আমাদের হার্ট ভাল রাখে। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।
কুমড়োর বীজ- কোভিড কাল থেকেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কুমড়োর বীজ। ওজন কমাতে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। এছাড়াও এই বীজের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিও। যাঁদের রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাঁরা রোজ খান এই বীজ।