মাত্র একমাসের মধ্যেই ওমিক্রনের সংক্রমণের জেরে বিধ্বস্ত বিশ্ব। এখনও পর্যন্ত পশ্চিমের দেশগুলিতেই সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে। পিছিয়ে নেই ভারত। ওমিক্রন সংক্রমণের নিরিখে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফও। কোভিনের এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট বহুবার নিজেকে মিউট্যান্ট করেছে। যে কারণে এর রোগ-লক্ষণ কিছুটা অন্যরকম। ওমিক্রনের হাত ধরেই এসেছে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন।
ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার মত সমস্যায় পড়েছিলেন বেশিরভাগ। অক্সিজেনের অভাব জনিত কারণেই বেশি মৃত্যু হয়েছিল। তবেন ওমিক্রনে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন এখনও পর্যন্ত তাঁদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টজনিত কোনও সমস্যার কথা শোনা যায়নি। কিন্তু যাবতীয় রোগ-লক্ষণ নিয়ে বারবার সতর্ক থাকতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওমিক্রন কোভিডের মূল স্ট্রেন থেকে কতখানি আলাদা তা এখনও জানা যায়নি। সেই সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( WHO)-এর তরফেও এখনও কিছু স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। বিষয়টি এখনও গবেষণাধীন। তবে কোভিডের প্রাথমিক লক্ষণ হল- জ্বর, মাথাব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া, গলা ব্যথা এবং সেই সঙ্গে স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতি হারানো।
যদিও যাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছেন তচাঁদের ক্ষেত্রে স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি সংক্রান্ত কোনও সমস্যা কিংবা শ্বাসকষ্টের সমস্যা নেই। তবে অধিকাংশ মানুষই যেহেতু টিকাপ্রাপ্ত সেহেতু অনেকেই উপসর্গহীন। বা আক্রান্ত হলেও নিজেরা টের পাচ্ছেন না। এছাড়াএ কিছুজনের ত্বকে নানা রকম ফুসকুড়ির সমস্যা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কনজাংটিভাইটিস, ডায়ারিয়ার মতো সমস্যাও থাকছে কিছু ক্ষেত্রে। তবে ব্যক্তিভেদে এবং তাঁদের স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে কিন্তু উপসর্গও বদলে যাচ্ছে কিছুক্ষেত্রে। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনটাই।
তবে যদি অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে, শ্বাস নিতে অসুবিধে হয় সেক্ষেত্রে কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। তবে সেই সঙ্গে আরও কয়েকটি উপসর্গের দিকেও কিন্তু সমান ভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন। ত্বকের রং ফ্যাকাশে হলে, নখ, ঠোঁট বিবর্ণ হয়ে গেলে কিন্তু বিষয়টি হালকা ভাবে নেবেন না। নখের রঙের এই পরিবর্তনকে কিন্তু কোভিড সংক্রমণের কারণ হিসেবে দেখা হয়।
ত্বক বা নখের এই রঙ পরিবর্তনের সমস্যাকে সায়ানোসিস বলে। যদি শরীরে কোনও কারণে অক্সিজেন কম আসে, রক্তে লেহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ কমে যায় তখনই কিন্তু এই সমস্যা হয়। আর এই সমস্যার সঙ্গে যদি আসে শ্বাসকষ্টের সমস্যা তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
শুধু তাই নয় ফুসফুস কিংবা হার্টে যদি রক্ত জমাট বাঁধে তাহলেও কিন্তু ত্বক এমন বিবর্ণ হয়ে যায়। দেখা দিতে পারে একাধিক উপসর্গ।
কোভিডের তৃতীয় ঢেউ কিন্তু ওমিক্রনের সংক্রমণ। এখনই সতর্ক না হলে বিপদ আরও অনেক বেশি বাড়বে। তখন কিন্তু সামাল দেওয়া মুশকিল। আর তাই এখন থেকেই সতর্ক হন। মাস্ক পরুন। এড়িয়ে চলুন ভিড়। সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন।
আরও পড়ুন: Flurona: করোনার সঙ্গে এবার মিশে যাচ্ছে ফ্লু, ইজরায়েলে ধরা পড়ল এই নতুন ধরনের সংক্রমণ…