করোনা (Corona) সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। বাড়ছে উদ্বেগ। ১ মে থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সীরাও ভ্যাকসিন (Vaccine) নিতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশনের জন্য তৎপর হয়ে উঠেছেন তাঁরাও। মানুষ সুরক্ষা কবচ নিচ্ছেন ঠিকই। জনস্বাস্থ্য় গবেষক থেকে চিকিৎসক, সকলেই মনে করছেন, এটি ভাল লক্ষণ। কারণ সচেতনতা থাকাই কাম্য। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে যা-যা করণীয়, সেই নিয়ম কেউ মানছেন কতজন? এই বিষয়ে TV9 বাংলা কথা বলল বেলেঘাটা আইডির চিকিৎসক বিশিষ্ট পালমোনোলজিস্ট ও কোভিড বিশারদ কৌশিক চৌধুরীর সঙ্গে।
প্রশ্ন: ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে কী-কী নিয়ম পালন করা বাঞ্ছনীয়?
চিকিৎসক: প্রথমেই বলি, ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে কোনও ধরনের নেশা না করাই ভাল। ধূমপান (Smoking) ও অ্যালকোহল (Alcohol) থেকে দূরে থাকতে হবে দু’-এক দিন আগে থেকে। আরও একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, ভ্যাকসিনেশনের (Vaccination) দিন কেউ যেন খুব গুরুতর অসুস্থ না থাকেন। শরীরে খুব জ্বর থাকলে ভ্যাকসিন নেওয়ার নিয়ম নেই। বা অন্যান্য কারণে অসুস্থ থাকলেও টিকা নিতে পারবেন না। যদি কেউ অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট (রক্ত জমাট না বাঁধার ওষুধ) খান, সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে হবে তাঁদের। চিকিৎসক যদি ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ দেন, তবেই নেওয়া যাবে, নচেৎ নয়। এছাড়া, অন্য কোনও সাবধনতা নেই। কেউ যদি ব্লাড থিনার খান (অ্যান্টি প্লেটলেট ওষুধ), সিরিঞ্জ ফোটানোর জায়গাটা চেপে ধরতে হবে, যাতে গলগল করে রক্ত না বেরিয়ে যায়।
প্রশ্ন: ভ্যাকসিন নেওয়ার পর শরীরে কী-কী অসুবিধে হতে পারে?
চিকিৎসক: অনেক অসুবিধে হতে পারে। ভয়ঙ্কর অসুবিধে হল, অ্যানাফাইলেক্সিস (ভ্যাকসিন নেওয়ার পর গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া – সাংঘাতিক অ্যালার্জি)। যদিও সেটা খুব বেশি আমরা দেখতে পাইনি এখনও পর্যন্ত। কিন্তু সাধারণত যেটা হতেই পারে, তাহল ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জ্বর (Fever), গা-হত-পা ব্যথা (Body Ache), ইনজেকশনের জায়গায় ব্যথা, বমি (Vomiting)। এর মধ্যে জ্বর হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।
আরও পডুন: RT-PCR-এ ফলস নেগেটিভ! বোকা বানাচ্ছে ভ্যারিয়েন্ট? নাকি গলদ নমুনা সংগ্রহেও?
প্রশ্ন: অর্থাৎ, আপনি বলতে চাইছেন, এতে চিন্তা করার কোনও কারণ নেই?
চিকিৎসক: না, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো (Vaccination Side-Effects) দেখা গেলে চিন্তার বিষয় একেবারেই নেই। জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল খেতে হবে। সেই সঙ্গে বিশ্রাম নিতে হবে। জল খেতে হবে বেশি পরিমাণে।
প্রশ্ন: এখন তো ভ্যাকসিনের আকাল সর্বত্র। দু’ধরনের ভ্যাকসিন মান্যতা পেয়েছে আমাদের দেশে – একটি কোভিশিল্ড (Covishield), অন্যটি কোভ্যাক্সিন (Covaxin)। এই পরিস্থিতিতে প্রথম ডোজ়ে একটি ভ্যাকসিন, দ্বিতীয়টিতে অন্য ভ্যাকসিন কি নেওয়া যাবে?
চিকিৎসক: না, একেবারেই নেওয়া যাবে না। এর অনুমতি নেই। দুটো ভ্যাকসিন নিলে একই কাজ হয় কিনা, সেই পরীক্ষাও এখনও হয়নি। ফলে অনুমতি আসেনি এখনও।
প্রশ্ন: একটি ভ্যাকসিন নেওয়ার কতদিনের মাথায় আর একটি ভ্যাকসিন নেওয়ার নিয়ম?
চিকিৎসক: কোভিশিল্ডের জন্য একরকম সময়, কোভ্যাক্সিনের জন্য একরকম। কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার নিয়ম। কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে ৪-৬ সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি ডোজ় নিয়ে নিতে হবে।
অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ