জীবনযাত্রা এখন আগের থেকে অনেক সহজ। যা প্রয়োজন তা সঙ্গে সঙ্গেই চলে আসছে আমাদের হাতের সামনে। আজ থেকে ১০০ বছর আগেও কিন্তু চিত্রটা এরকম ছিল না। রান্নায় ভরসা ছিল শিলে বাটা মশলা, কিছু ক্ষেত্রে হামানদিস্তা। এখন বেশিরভাগ বাড়িতেই আর নেই শিল নোড়ার অস্তিত্ব! এই প্রজন্মের অনেকেই শিল নোড়া চোখে দেখেননি। তেমনই সর্দি-কাশি কিংবা সিজন চেঞ্জের সমস্যায় মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক নয়। বরং অনেক বেশি ভরসা থাকত ঘরোয়া থাকত ঘরোয়া টোটকায়।
মধু, আদা, ঘি, লবঙ্গ, এলাচ, কাঁচা হলুদ,দুধ, কালমেঘ- প্রাচীনকালে মুনি-ঋষিরা সুস্থ থাকতে ভরসা রাখতেন এই সব খাবারের উপরেই। ওষুধও তৈরি হত এই সব উপাদান থেকেই। আদার উপকারিতা অনেক। কিন্তু বেশিদিন সেই আদা সংরক্ষণ করার উপায় তখন ছিল না। ফলে প্রাচীন পদ্ধতি মেনেই বাড়িতে বানিয়ে রাখা হত শুকনো আদার পাউডার। সংক্রমণ রোধে এই শুকনো আদার পাউডারের ভূমিকা অনেকখানি।
আর্য়ুবেদে এই শুকনো আদার পাউডার শুন্তি ( Shunti) নামে পরিচিত। আর এই আদার কিন্তু উপকারিতা অনেক। এই শুকনো াদা হজমের সমস্যায় ভাল কাজ করে। শীতকালে ফুলকপি, মূলো, বাঁধাকপি এই সব খাবার বেশি খাওয়া হয়। ফলে সেখান থেকে খুব সহজেই গ্যাস হয়ে যায়। এছাড়াও গরম জলে স্নান, বেশিক্ষণ গায়ে গরম জামা রাখা এসবের জন্যও কিন্তু পেট গরম হয়। আর তাই এই সময় প্রতিদিন দুপুরে এক গ্লাস শুকনো আদার জল খেতে পারলে খুব ভাল।
*এছাড়াও অনেকের খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে। কিংবা খাবার খাওয়ার পরই পেট জ্বালা করে। তাঁদের জন্যেও কিন্তু বেশ ভাল এই শুকনো আদা।
*ক্রনিক যে কোনও সমস্যায় খুব ভাল এই শুকনো আদা। সকালে উঠে ভেজানো বাদাম, একটু পাটালি গুড় আর সামান্য এই আদার পাউডার একসঙ্গে খেতে পারলে ভাল উপকার পাবেন। এছাড়াও শুকনো ছোলা, গুড় আর আদা পাউডার একসঙ্গে মিশিয়ে লাড্ডু বানিয়ে রাখতে পারেন।
*এছাড়াও আদার গুঁড়ো যে কোনও সময় ব্যবহার করা যায় রান্নাতেও।
*শীতে নাক দিয়ে জল পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা লেগেই থাকে। সেক্ষেত্রে গোলমরিচের গুঁড়ো, আদা পাউডার আর সামান্য নুন মিশিয়ে খেতে পারলে উপশম হয় দ্রুত।
*যে ভাবে বানাবেন আদার পাউডারমাইক্রোওভেন ২০০ ডিগ্রিতে প্রি হিট করে ছুলে রাখা আদার টুকরো দিন। ৪ মিনিট ভাল করে রোস্ট করে নিন। এবার তা বাইরের সাধারণ তপমাত্রায় এনে তিন থেকে চারদিন পর পর রোদে দিন। এরপর তা গুঁড়ো করে বোতল বন্দি করুন।
যে ভাবে খাবেন আদা-পাউডার জল
একলিটার জল ফুটতে বসান। এবার এতে বড় দু চামচ আদা পাউডার মেশান। জল ফুটে ৭৫০ এম এল হয়ে এলে তবেই গ্যাস অফ করুন। এবার এই জল খান সারাদিন ধরে। তবে একদম ঠান্ডা নয়, ইষদুষ্ণ অবস্থায় খান।