কন্ডোম ছাড়াই সেক্স করেন? ভয়াবহ ইনফেকশন হতে পারে মূত্রথলিতে
Bladder Infection: ইউটিআই-এর মতোই ব্লাডার ইনফেকশনের ঝুঁকি মহিলাদের মধ্যে বেশি। এমনকি ইউটিআই-এর মতোই মূত্রথলি সংক্রমণের উপসর্গগুলো এক। কিন্তু কোন-কোন কারণে এই ব্লাডার ইনফেকশন হয় এবং কোন উপায়ে এই অবস্থা থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা যায়, তা অনেকেরই অজানা।

বারবার প্রস্রাবের বেগ আছে। কিন্তু প্রস্রাব হচ্ছে না। হলেও ইউরিনের রং গাঢ় হলুদ। পাশাপাশি প্রস্রাবের সময় ব্যথা হচ্ছে। জ্বালাভাব অনুভব করছেন। এসব উপসর্গগুলো দেখে হয়তো ভাবছেন আপনার ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন হয়েছে। কিন্তু মূত্রনালির সংক্রমণ নাও হতে পারে। আপনি বা মূত্রথলির সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারেন। ইউটিআই-এর মতোই ব্লাডার ইনফেকশনের ঝুঁকি মহিলাদের মধ্যে বেশি। কিন্তু কোন-কোন কারণে এই ব্লাডার ইনফেকশন হয় এবং কোন উপায়ে এই অবস্থা থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা যায়, তা অনেকেরই অজানা।
ব্লাডার ইনফেকশনের কারণ:
১) অসুরক্ষিত যৌন মিলন মূত্রথলির সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাই যৌন মিলনের সময় অবশ্যই কন্ডোম ব্যবহার করুন। এছাড়া অতিরিক্ত পরিমাণে সেক্স টয় বা লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করলে সংক্রমণের সমস্যা বাড়ে। যৌন ক্রিয়ার সময় ভ্যাজাইনা থেকে ব্যাকটেরিয়া সহজেই মূত্রনালিতে চলে যায়। এতেই মূত্রথলিতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
২) যেখানে-সেখানে প্রস্রাব করার অভ্যাস মূত্রথলির সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অপরিষ্কার জায়গায় প্রস্রাব করলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালি ও মূত্রথলিতে প্রবেশ করে। এখানেই ইউটিআই ও ব্লাডার ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন।
৩) দীর্ঘক্ষণ ধরে প্রস্রাব চেপে থাকেন? এই অভ্যাসও আপনার মধ্যে ব্লাডার ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে থাকলে ব্লাডারে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি ঘটে এবং এতেই সংক্রমণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
৪) ওবেসিটি, ডায়াবেটিসের মতো লাইফস্টাইল ডিসঅর্ডার ব্লাডার ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ায়। ওজন বাড়লে ঘাম বেশি হয় এবং এতে যোনি এলাকায় ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ে। একইভাবে, ডায়াবেটিসেও ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি ঘটে। আর ভ্যাজাইনাল ব্যাকটেরিয়া সহজেই যোনি থেকে ব্লাডারে পৌঁছে যায় এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।
৫) যখনই ব্লাডার ইনফেকশন বা ইউটিআই-এর লক্ষণগুলো দেহে প্রকাশ পাবে, দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। মূত্রনালি ও মূত্রথলির সংক্রমণ ধরা পড়লে এবং তার ঠিকমতো চিকিৎসা না করালে এই অবস্থা ভবিষ্যতে আরও বেশি ভোগাতে পারে।
ঘরোয়া উপায়ে সেরে উঠুন:
১) হার্বাল টি পান করুন। হার্বাল চায়ের মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে, যা ব্লাডার ইনফেকশন থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। হার্বাল চায়ের মধ্যে অবশ্যই দারুচিনি ও লেবুর রস মেশাবেন। এতে সংক্রমণ বাড়াবাড়ি অবস্থা পোঁছাবে না।
২) মূত্রনালি ও মূত্রথলির সংক্রমণ হলে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করলে শরীর থেকে সমস্ত দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায়। এমনকি ব্লাডার থেকে ব্যাকটেরিয়াও বেরিয়ে যায়। তাছাড়া শরীর হাইড্রেট থাকলে ইউটিআই ও ব্লাডার ইনফেকশনের ঝুঁকি এড়াতে পারবেন।
৩) ব্লাডার ইনফেকশনে আক্রান্ত হলে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলুন। অন্তত সপ্তাহে ২-৩ দিন মাছ-মাংস, দুধ-পনির খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন। চেষ্টা করুন মরশুমি ফল ও সবজি খাওয়ার। হজম স্বাস্থ্য ভাল থাকলে এটি এনার্জি লেভেল বাড়িয়ে তোলে। এতে সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা পাওয়া যায় এবং টক্সিনও শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
