জ্বর-সর্দি, গ্যাস-অম্বল, বাত-স্পন্ডালাইটিসের ব্যথার মতো সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নজরই দিই না। অথচ, মানুষের জীবনে মানসিক চাপই সবচেয়ে বেশি। কখনও শরীরস্বাস্থ্য, আবার কখনও কাজ বা সাংসারিক জীবন নিয়ে চিন্তা লেগেই থাকে। মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল না রাখলে এখান থেকে ডিপ্রেশন, অ্যানজাইটির মতো রোগ বাসা বাঁধতে পারে। এমনকি উচ্চ রক্তচাপ, সুগারের মতো রোগও মানসিক চাপ বাড়ার কারণে দেখা দিতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল আপনি সামগ্রিক ভাবে খাওয়া-দাওয়া ও শরীরচর্চা মাধ্যমে রাখতে পারেন। স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল মানসিক স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতেও সাহায্য করে।
অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমেই আপনি বিষণ্ণতাকে দূর করতে পারেন। মন খারাপ হলে আপনি যেমন মোমো বা আইসক্রিম খান, ঠিক তেমনই রোজের খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ডি, ম্যাগনেশিয়ামের মতো পুষ্টিতে ভরপুর খাবার রাখলে মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হবে। তাজা শাকসবজি থেকে শুরু করে গোটা শস্য সবই খেতে পারেন। তবে, ফলের ক্ষেত্রে বিশেষ টিপস মেনে চলুন।
সাধারণত আপেল, কলা, বেরি, শসার মতো ফল খেলে মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে। পাশাপাশি ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তবে, সাম্প্রতিকতম একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেলে মেজাজ উন্নত হয় এবং বিষণ্ণতা কমে। দ্য ব্রিটিশ জার্নাল অফ নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মাত্র ৪ দিনের কম সময়ে আপনি কিউই খেয়ে মনকে ভাল রাখতে পারেন। ওটাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে করা এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রোজ কিউই খেলে মেজাজ ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
১৫৫ জনের উপর এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতিদিন একটা করে ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট, প্লেসবো কিংবা দুটো কিউই দেওয়া হয়েছিল। সেখানে অংশগ্রহণকারীদের লাইফস্টাইল, মেজাজ, বিকাশ, ঘুমের মান ও শারীরিক কার্যকলাপ দেখা হয়। ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট যাঁরা গ্রহণ করেছিলেন, ১৪-১৬ দিন পর তাঁদের মেজাজের উপর প্রভাব পড়েছে। অথচ, যাঁরা কিউই খেয়েছে, তাঁদের মেজাজ ১২ দিনের মধ্যে উন্নত হতে শুরু করেছে। তবে, কিউইয়ের পাশাপাশি আপনি কমলালেবু, মুসাম্বিলেবুর মতো ভিটামিন সি যুক্ত ফলও খেতে পারেন। তার সঙ্গে যে সব সবজিতে ভিটামিন সি (বেলপেপার, টমেটো, ব্রকোলি) পাওয়া যায়, সেগুলোও খেতে পারেন।
ভিটামিন সি যুক্ত ফল ও শাকসবজি সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এই পুষ্টি দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং অক্সিডেটিভ চাপ কমায়, ফ্রি র্যাডিকেলের সঙ্গে লড়াই করে এবং জ্ঞানীয় স্বাস্থ্য বজায় রাখে। সেরোটোনিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের সংশ্লেষণকেও সাপোর্ট করে। তাই ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেলে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।