জুলাই শেষ হওয়ার আগেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার অতিক্রম করেছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামবাংলাতেও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ডেঙ্গি। প্রতি বছর বর্ষা এলেই চোখ রাঙায় ডেঙ্গি। গত এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যে পাঁচ ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। ঋতু পরিবর্তনের কারণে যেহেতু এখন ভাইরাল জ্বরও হচ্ছে, তাই ডেঙ্গি জ্বর নিয়ে সাবধান থাকা জরুরি। মরশুম বদলের সময় এখন জ্বর-সর্দির সমস্যা ঘরে ঘরে। তাই দেহে ডেঙ্গি বাধা বেঁধেছে কিনা তা বোঝার জন্য উপসর্গগুলো চিনে নিন।
প্রত্যেক বছর প্রায় ১০ কোটি বছর মানুষ এডিস ইজিপ্টাই মশার কামড়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়। ভাইরাল ও ডেঙ্গি জ্বরের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনেকেই সেই ফারাক বুঝতে পারেন না। তাই ডেঙ্গির উপসর্গ সম্পর্কে জেনে রাখা দরকার।
ডেঙ্গিতে জ্বরের তীব্রতা অনেক বেশি হয়। ডেঙ্গিতে প্রায় ১০৪ ফারেনহাইট জ্বর উঠে যায়। একে চিকিৎসার পরিভাষায় ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার বলা হয়। ডেঙ্গির জ্বর ২ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। জ্বর ছাড়াও মাথাব্যথা, গা-হাত-পায়ে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা, ডায়ারিয়া, বমি বমি ভাব দেখা দেয়। শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি গায়ে র্যাশ বেরোতে শুরু করে। এছাড়া মাড়ি, নাক দিয়ে রক্তপাত, গলাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গি রোগীকে বাড়িতে রেখেই শুশ্রূষা করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে রোগীকে তৎক্ষণা হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। কোন-কোন উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করবেন, জেনে নিন।
পেটে ব্যথা, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, মাড়ি, নাক বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত, ত্বকে লাল র্যাশ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করুন। ডেঙ্গি শক সিনড্রোম তৈরি হলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। তখন পালস রেট বেড়ে যায় এবং রক্তচাপ কমে যায়। এর জেরে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় এবং দেহে অস্বস্তি তৈরি হয়। এমন অবস্থা তৈরি হলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিন।
ডেঙ্গি থেকে সুস্থ হওয়ার জন্য ডায়েটের উপর বিশেষ জোর দিতে হবে। এ সময় শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। তাজা ফল ও শাকসবজি রাখুন ডায়েটে। ডেঙ্গি হলে শরীরকে জলশূন্য হতে দেওয়া যাবে না। তাই প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করুন। ডাবের জল, ফলের রস, স্যুপ, চিকেন স্টু খেতে পারেন।