ভারত-বাংলাদেশ বাকযুদ্ধে এমনিতেই উত্তাল দুই বাংলা। চারদিনে কলকাতা, আগরতলা ও সেভেন সিস্টার্স দখল করবেন তাঁরা! যা শুনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন “ভাববেন না আমরা বসে বসে ললিপপ খাব।” এর পরেই ফের বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভি বলেন, “আমরা কি আমলকি মুখে চুষব?”
হঠাৎ রিজভির মুখে আমলকি কেন? ললিপপ চোষে, লেবনচুস চোষে এমনকি আম চুষে খায় অনেকে।
কিন্তু আমলকি কেউ চুষে খায় শুনেছেন কখনও? বাংলাদেশে কি আমলকি চুষে খায় না কামড়ে খায়? বাংলাদেশে কি আমলকি খুব জনপ্রিয় একটি ফল? যদিও এমন কোনও তথ্য মেলে না, যে শুধুমাত্র বাংলাদেশে আমলকি পাওয়া যায়। এশিয়া মহাদেশেই আমলকি মহৌষধি বলে পরিচিত। শীতকালে এই ফল পাওয়া যায় বলে, তাঁর মুখে কথা চলে এসেছে বলেই অনুমান। আচ্ছা আমলকি ‘চুষলে’ কী হয়, জানেন?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কিন্তু বলছেন, আমলকি খাওয়া শরীরের জন্য বেশ ভালই। আমলকিতে আছে ভরপুর মাত্রায় ভিটামিন সি। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করতে সাহায্য করে এই উপাদান। সংক্রমণজনিত সমস্যা রুখে দিতে বেশ উপকারী আমলকির রস। তবে নিয়মিত আমলকী খেলে কী প্রভাব পড়ে শরীরে, জানেন?
নিয়মিত আমলকী খেলে তা হজমে সাহায্যকারী উৎসেচক ক্ষরণ করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরের পাচনশক্তির উন্নতি হয়। আমলকিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তাঁদের জন্য আমলকি বেশ উপকারী।
আমলকিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ বেশি। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না।
মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ভাল না হলে চুলও নির্জীব হয়ে পড়ে। চুলের ফলিকলে পুষ্টি পৌঁছবে না। আমলকির রস কিন্তু চুলের পুষ্টি জোগাতে বেশ কার্যকর।
রক্তে ইনসুলিনের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতেও অব্যর্থ আমলকি। ডায়াবেটিস নিত্যসঙ্গী হলে আমলকির রস খেতে পারেন।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতিসাধন করতেও উপযোগী আমলকি। এতে আছে ক্যারোটিন, যা দৃষ্টিশক্তির বাড়াতে কার্যকর। আমলকি রোজ খেলে চোখের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
ললিপপের থেকে আমলকি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। মেনে নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরাও। তাই দখল টখল নেওয়ার ভাবনা ছেড়ে যদি আমলকি খাওয়ায় মন দেন বাংলাদেশিরা, তাতে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে বলে মত চিকিৎসকদের। বিশেষ করে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। তাই যুদ্ধ ছেড়ে নিজের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য প্রতিদিন আমলকি খাওয়াই ভাল।