মেনোপজ (Menopause) বা ঋতুবন্ধ শব্দটির সঙ্গে কমবেশি আমরা সকলেই পরিচিত। মহিলাদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়াকেই মেনোপজ বলে। তবে এই ঘটনা শুধু মহিলাদের সঙ্গেই ঘটে, এমনটা নয়। পুরুষরাও এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যান। এই ব্যপারে সেরকম আলোচনা না হওয়ার দরুণ অনেকেই বিশেষ জানেন না।তবে পুরুষদের মেনোপজের ব্যপারটা, মহিলাদের থেকে খানিকটা আলাদা। কী ধরনের এই মেনোপজ? এর উপসর্গ বা চিকিৎসাই বা কী? আসুন জেনে নেওয়া যাক…
পুরুষদের মেনোপজকে ডাক্তারি পরিভাষায় অ্যান্ড্রোপজ বলে। ৪০ বছরের পর পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বছরে গড়ে প্রায় এক শতাংশ হারে কমতে থাকে। যা তাঁদের ধীরে-ধীরে মেনোপজের দিকে চালিত করে।
অ্যান্ড্রোপজের উপসর্গ:
পুরুষদের মধ্যে মেনোপজের ফলে ক্লান্তি, কার্যক্ষমতা হ্রাস, মেজাজের পরুবর্তন, মানসিক অবসাদ ইত্যাদি শারীরিক লক্ষণ দেখা দেয়। এছাড়াও শুক্রাশয় ছোট হয়ে আসে, শরীরের বেশীরভাগ রোম ঝরে যায়। শুধু তাই-ই নয়, এই সময় ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হয় এবং যৌন মিলনে অণীহাও আসে। কারও-কারও আবার এই সময় ওজনও বেড়ে যায়।
অ্যান্ড্রোপজের দরুণ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা:
পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যাওয়াকেই মেনোপজ বলে। আর শরীরে এই হরমোনের পরিমাণ হ্রাস পেলে বাড়ে ডায়াবেটিস, অস্টিওপোরেসিসের ঝুঁকি।
কাঁদের অ্যান্ড্রোপজের ঝুঁকি বেশি?
১.সাধারণত ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সের পুরুষদের মধ্যে এই মেনোপজ দেখা দেয়। তবে কেউ-কেউ আবার ৮০ বছর বয়সেই এর শিকার হন। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এই অ্যান্ড্রোপজের অন্যতম প্রধান কারণ।
২.বিশেষ করে যাঁরা মদ্যপান ধূমপান করেন তাঁদের অ্যান্ড্রোপজের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর ডায়েট, শরীরচর্চার অভাবেও বয়সের আগেই অ্যান্ড্রোপজ থাবা বসাতে পারে।
৩.আপনার পরিবারে যদি এই মেনোপজের ইতিহাস থাকে তবে আপনিও এই সমস্য়ার শিকার হতে পারেন।
৪.এছাড়াও স্থূলতা, ডায়াবেটিস, দুর্বলতার কারণে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ কমে গেলে এই সমস্যা দেখা দেয়।
অ্যান্ড্রোপজের চিকিৎসা:
এই সমস্যার চিকিৎসা রয়েছে। টেস্টোস্টেরন প্রতিস্থাপন থেরাপির মাধ্যমে শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা স্বাভাবিক করা যায়। তবে এই চিকিৎসা যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ। এবং অবশ্যই এবিষয়ে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন।
জীবনযাত্রায় লাগাম:
এই সমস্যার বিরুদ্ধে লড়ার আরও একটি উপায় হল স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। ঘড়ির কাঁটা মেপে খাওয়া-দাওয়া করুন। এবং অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলুন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। তাহলেই কিছুটা হলেও এই অ্যান্ড্রোপজের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।