আন্ডারওয়াটার যোগা (Underwater Yoga)। নতুন নাম। নয়া যোগার বিশেষত্ব হল এই যোগা জলের নীচে যোগ-ব্যায়ামের নানান কৌশল অবলম্বন করা হয়। সাধারণত সুইমিং পুল বা স্পা-তে এই বিশেষ পদ্ধতিতে শরীরচর্চা করা হয়। ধ্যান হল প্রাচীন ভারতের অন্যতম উপায়। আর ফিট থাকতে ও মনোবল বাড়াতে জলের নিচে শরীরচর্চার আরেক নাম হল আন্ডারওয়াটার যোগা। ধ্যানের চরম অনুশীলন ও জলের নিচে শ্বাস বন্ধ করে রাখার কৌশলকেই আন্ডারওয়াটার যোগা বলে পরিচিত।
দীর্ঘ সময় ধরে শ্বাস ধরে রাখা একটি অভিনব দক্ষতা। যে কারোর এই প্রতিভা থাকে না। কিন্তু যাঁরা চেষ্টা করেন ও জলের নিচে যোগব্যায়াম বা শরীরচর্চা করতে পারেন, তাঁরা এই যোগের কৌশলের নানান সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
জলের নিচে অনুশীলন করার সুবিধা
মেডিটেশন করতে ও যাঁরা যোগায় সিদ্ধহস্ত, তাঁদের জলের নিচে দক্ষতা বাড়াতে এই কৌশলে অনুশীলন করতে দেখা যায়। মানুষের স্বাস্থ্যের সুবিধার জন্য বিশেষজ্ঞদের দ্বারা এই কৌশল অবলম্বন করা উচিত। এই আন্ডারওয়াটার যোগ এখন ভারতের জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। উল্লেখ্য, এই কৌশল ভারতেই প্রথম শুরু হয়।
মানসিক চাপ কমায়
মানসিক চাপ একটি সাধারণ এবং গুরুতর সমস্যা। তরুণ থেকে প্রবীণ, সকলেই এই চাপ কমাতে ওষুধ ও রিহ্যাবের দ্বারস্থ হন। কিন্তু এটি একটি স্বাভাবিক জীবনযাত্রার জন্য মোটেই উপকারী নয়। কারণ ক্রমবর্ধমান জীবনে চাপ সব বয়সের মানুষের মধ্যে দেখা যায়। মানসিক চাপ থেকে বিষন্নতা, অবসাদের সৃষ্টি হয়। যোগের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা নতুন কিছু নয়। তবে অপ্রয়োজনীয় চাপ ও হতাশা কাটিয়ে উঠতে জলের নিচে যোগার কৌশল অনুসরণ করতে পারেন।
সুস্থ হার্টের জন্য
দূষণ, অস্বাস্থ্যকর খাবার, রুটিন না মেনে অনিয়মিত জীবনযাপন হার্টের সমস্যার কারণ নিশ্চিত। কোলেস্টেরল, রক্তচাপ সহ বার্ধক্যজনিত হার্ট ব্লকেজ সাধারণ ঘটনা। কম বয়সে হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য যে তীব্রতা দেখা দেয় তা ওষুধের উপর নির্ভরশীলতার দিকে নিয়ে যায়। তিরিশ পেরোতে না পেরোতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া নতুন কোনও ঘটনা নয় বর্তমানে। কিন্তু এই সমস্যা এড়াতে যোগ ও ধ্যানের মতো অনুশীলনগুলি হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
শ্বাসকষ্ট কমায়
জন্মের পর থেকেই মানুষের মধ্যে হাঁপানি, অ্যালার্জিও বেড়ে চলেছে। এই সমস্যা চিকিত্সার মাধ্যমে সেরে যায়। এর জন্য ওষুধেরও দরকার পরে। তবে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, অ্যালার্জির হ্রাস করতে আন্ডারওয়াটার যোগার পথ অনুসরণ করতে পারেন । দারুণ ফল পাবেন তাতে।
সাঁতার, ডাইভিংয়ের মতো জলের নীচে শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষমতা বাড়াতে ও দক্ষতা অর্জন করতে এই কৌশল নতুন কিছু নয়। শরীর ফিট রাখতে এই পন্থা অবলন্বন করে ভাল রয়েছেন বহুজন।
শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখতে
জলের নিচে স্থিরভাবে থাকা বেশ কঠিন ব্যাপার। শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে এই যোগা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে শরীরের কোনও অংশ না নাড়িয়ে এই অনুশীলন করা হয়। জলের নীচে ধ্য়ান করা কোনও মুখের কথা নয়। এই যোগার মাধ্যমে শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করতে ও বারসাম্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আর্ট অফ লিভিং
যত বেশি কঠিন যোগা অনুশীলন করা হবে, সে তত বেশি মানসিক শান্তি অর্জন করতে পারবেন। জীবনে নতুনভাবে বাঁচার রসদ খুঁজে পেতে এই যোগা অত্যন্ত কার্যকরী। হতাশা ও মানসিক চাপ দূর করার জন্য এই উপায়গুলি জেনে রাখা ভাল। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় হতাশা ও মানসিক চাপ কমে যায়। সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসেরও বৃদ্ধি ঘটে।
গ্রীষ্মকালে জলের নীতে যোগব্যায়াম বেশ প্রচলিত। তবে যাঁরা যোগায় বিশ্বাসী, বা নিয়মিত যোগব্যায়াম করে থাকেন, তাঁরা সারা বছর ধরেই এই অনুশীলন করে থাকেন।
আরও পড়ুন: COVID-19: লকডাউনে প্রায় ৭০ শতাংশ ক্যানসার রোগীর সার্জারি বাতিল হয়েছে! গবেষণায় নয়া তথ্য