উত্সবের মেজাজে এখন গোটা বিশ্ব। কারণ ওমিক্রনের (Omicron) দাপট কমতেই শুরু হয়েছে বিধি-নিষেধ শিথিল করার প্রচেষ্টা। এখনও গোটা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মারণভাইরাস (Coronavirus)। ইতোমধ্যেই করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্টে (New Varient of Coronavirus) ছোবলে আক্রান্ত জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন। মৃত্যুসংখ্যা বাড়ছে চিনেও। ২ বছর কেটে গেলেও করোনাভাইরাসের থেকে মুক্তি পাওয়ার এখনও কোনও লক্ষণ নেই। এ ব্যাপারে আশার দিশা দেখাতে পারছেন না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ডিরেক্টর টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসুস।
শনিবার একটি বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের নয়া ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে বিশাল পরিমাণের ভুল তথ্য় রয়েছে। যার ফলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল ‘ওমিক্রনের প্রভাব মাঝারি মাত্রার’, কিন্তু ‘অতিমারি যে সমাপ্ত’ তা কখনও বিশ্বের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয়নি।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড ১৯ টেকনিক্যাল লিড ও ইনফেকশন ডিজিজ এপিডেমিয়োলজিস্ট মারিয়া ভান কারখোভ জানিয়েছেন, ‘এই প্রসঙ্গে আমাদের কাছে ভুরি ভুরি ভুল তথ্যের অভিযোগ আসছে। ভুল বোঝাবুঝিটা হয়েছে যে ওমিক্রন হল মাঝারি মাত্রার। ভুল তথ্য হল অতিমারির দিন শেষ। ভুল তথ্য আরও রয়েছে। তা হল এটাই শেষ ভেরিয়েন্ট নিয়ে, যেটি আমরা সকলেই এর প্রকোপে পড়েছিলাম। আরও অনেক ভুল তথ্যের জন্য বেড়ে চলেছে এই অতিমারির রেশ।’
সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে একটি তথ্য শেয়ার করেছে হু। যেখানে একটি রিপোর্টে দেখানো হয়েছে কোভিড ১৯ আগের তুলনায় বিশ্বে প্রায় ৮ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। প্রায় ১১ মিলিয়নের বেশি কোভিড আক্রান্তের সনাক্তকরণ করা গিয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা টেস্টিংয়ের মাধ্যমে এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট হাতে এসেছে বলে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি এও বলা হয়েছে শেষ তিরিশদিনের মধ্য়ে ৯৯.৯ শতাংশই হল ওমিক্রন। তার মধ্যে ৭৫ শতাংশ বল ওমিক্রন বিএ.২ ও ২৫ শতাংশ হল বিএ.১। কেরখোভ জানিয়েছেন, ‘একজন বাদ গিয়েছেন, কারণ তিনি টেস্ট করাননি। ওমিক্রনের প্রত্যেক ভেরিয়েন্ট নিয়েই সতর্ক থাকা দরকার। ওমিক্রনের ট্র্যাক রাখা খুব অসম্ভব হয়ে উঠেছে, কারণ করোনা টেস্টিংয়ের সংখ্যা দিনে দিনে অনেক কমে যাচ্ছে। ফলে এর তল খুঁজতে গিয়ে খেই হারিয়ে যাচ্ছি। যদি কেউ টেস্ট না করান তাহলে এই ভেরিয়েন্টের প্রভাব ও ক্ষমতা বোঝা দায়।’
তিনি এও জানিয়েছেন, ‘কোভিড ভ্যাকসিনের কারণে আগের তুলনায় অনেক রোগের প্রভাব, মৃত্যুর হার অনেক কমেছে। ওমিক্রনের বিরুদ্ধে লড়াইটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।’ এও জানিয়েছেন যে, ‘জনসংখ্যার স্তরের ভিত্তিতে বিএ.২ থেকে বিএ.১-এর পরিবর্তন দেখতে এখনই পাচ্ছি না। তবে এমন অনেক কেস রয়েছে যেগুলি হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর তাতেই মৃত্যুসংখ্যা বেড়ে চলেছে। তারমানে মানু। প্রাথমিকভাবে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন না অথবা ভ্য়াকসিন অর্ধেক নিচ্ছেন। এখনও বহু দেশেই টিকাকরণের হার যেহেতু বেশ কম, তা রীতিমতো উদ্বেগের।’
ওমিক্রনকে হালকাভাবে নেওয়া চলবে না। ওমিক্রনও করোনাভাইরাস অতিমারির ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিয়েছেন হুয়ের ডিরেক্টরও। তাঁর কথায়, ‘ওমিক্রন ডেল্টার থেকে কম মারাত্মক বা যাদের টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে তাঁদের জন্য কম ক্ষতিকারক। কিন্তু এটাও বিপজ্জনক ভাইরাস। এর সংক্রমণের ফলেও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বা মৃত্যুর ঝুঁকি থাকছেই।’