খাওয়ার নষ্ট করা মোটেই কোনও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। আর তাই পাতে খাবার পড়ে থাকতে দেখলে তেল্ -বেগুনে জ্বলে ওঠেন মায়েরা। সেই খাবার তাঁরা প্রাণে ধরে ফেলতে পারেন না। আর তাই সন্তানের খেয়ে ওঠা থালাতেই অবশিষ্ট খাবারের সঙ্গে নিজের খাবার নিয়ে বসেন। সন্তানের এঁটো, তাই সে খাবারে মায়েদের কোনও বাছ বিচার থাকে না। পাতে পড়ে থাকা অতিরিক্ত বেগুনভাজা, মাংসের ঝোলের আলু থেকে মাছের টুকরো-সবই তাঁরা খেয়ে নেন। কথায় বলে অন্নপূর্ণার হেঁশেল। অর্থাৎ- যেখানে খাবার কখনও ফুরোয় না। এই প্রয়োজনীয় খাবারটুকু রোজ জোটাতেই কিন্তু সকলে পরিশ্রম করে চলেছেন। তাই সেই খাবারের মূল্য বোঝা উচিত প্রত্যেকেরই। পরিমাণে খাওয়া এবং মেপে খাওয়া ছোট থেকেই রপ্ত করা প্রয়োজন সকলেরই। কারণ এতে শরীর সুস্থ থাকে। আজকাল বেশিরভাগ মানুষই তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন। কিন্তু ২৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে কিন্তু ওবেসিটির সমস্যা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিসের সমস্যাও থাকে এই বয়সে।
মহিলাদের বিশেষ করে মা-কাকিমাদের স্থূলতা বা ওবেসিটির সমস্যার জন্য এই অতিরিক্ত খাওয়া দায়ী বলে মনে করেন অনেক অনেক পুষ্টিবিদই। সন্তানের পছন্দমতো খাবার সব সময় সব মায়ের রান্না করতে ইচ্ছে নয়। সন্তানের যত্ন আত্তির কোনও ত্রুটি রাখেন না কোনও মা-ই। যেহেতু তিনি নিজে হাতে ধরে রান্না করছেন তাই অতিরিক্ত খাবার ফেলে দিতে তাঁদের বড়ই মায়া হয়। দুটো রুটিও যদি বেশি থাকে সেদিনকার ফ্রেশ খাবার ছেড়ে তাঁরা ওই বাসি খাবারই খান। সামান্যই ভাত বেঁচে, তাঁকেও হয়তো জোর করে খেতে হবে। কিন্তু তিনি তা ফেলে দিতে পারেন না প্রাণে ধরে। এতে অতিরিক্ত খাওয়া হয়। শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যায়। আর যার ফল হল এই অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি। বেশিরভাগ মা-কাকিমারাই কিন্তু আলাদা করে শরীরচর্চার জন্য কোনও সময় পান না। বলা ভাল নিজেদের জন্য তেমন ভাবেন না। ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই তা সত্য।
অতিরিক্ত খাওয়া, বাসি খাবার খাওয়া থেকেই আসে হজমের সমস্যা। বিপাক ক্রিয়াও কমে যায়। আর যে কারণে তখন সুগার, কোলেস্টেরলের মত সমস্যা জেঁকে বসে। মেনোপজের পর এমনিও মহিলাদের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। পলিসিস্টিক ওভারি বা ইউটেরাসে কোনও সমস্যা থাকলে পরবর্তীতে তা জটিল আকার নেয়। এছাড়াও ইউটেরাসের ক্যানসারে এখন অনেক মহিলাই ভুগছেন। এসবও কিন্তু ওজন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এসবের সঙ্গে অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, খাওয়ারের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ গ্যাপ পড়ে যাওয়া এসবও কিন্তু ওজন বাড়ার জন্য দায়ী। বাড়ির কাজে শারীরিক পরিশ্রম হয় ঠিকই কিন্তু তার সঙ্গে রোজকার মর্নিং ওয়াক, প্রাণায়ম, ব্যায়ামের ফারাক থাকে। আর তাই সুস্থ থাকতে অতিরিক্ত খাওয়া, অনিয়ম এসব এড়িয়ে চলা একান্ত প্রয়োজন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।