হার্ট অ্যার্টাক বা হৃদরোগের সমস্যা আগের তুলনায় অনেকখানি বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও। সম্প্রতি জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনে একটি সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে সপ্তাহে দুদিন যদি অ্যাভোকাডো খাওয়া যায় তাহলে কিন্তু অনেকটাই কমে হৃদরোগের ঝুঁকি। সেই সঙ্গে খাদ্যতালিকায় ফাইবার, মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, এসব রাখার কথা বলা হয়েছে। কারণ এই সব উপাদান আমাদের হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও বেশ কিছু পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কিন্তু ভূমিকা রয়েছে এই অ্যাভোকাডোর। কারণ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লেই কিন্তু সেখান থেকে আসে আরও একাধিক সমস্যা। গবেষকরা প্রাথমিক ভাবে দেখেছেন অ্যাভোকাডো খেলে এড়ানো যায় স্ট্রোকের মত সম্ভাবনা। অ্যাভোকাডো সব সময় হাতের সামনে না পেলে কলা, আমন্ড, চিয়া সিডস, পিনাট বাটার এসবও কিন্তু রাখতে পারেন রোজকার ডায়েটে। এখান থেকেও একই উপকারিতা পাওয়া যায় এবং হৃদরোগের আশঙ্কা কমে।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, উদ্ভিজ প্রোটিন থেকে যে অসসম্পৃক্ত চর্বি পাওয়া যায় তা আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। হৃদরোগের নিরিখে সবচেয়ে এগিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে কিন্তু গত ২০ বছরে আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে এই অ্যাভোকাডোর ব্যবহার। গত ৩০ বছর ধরে আমেরিকায় ৩০-৫৫ বছর বয়সী ৬৮,৭৮০ জন মহিলার মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়। সেই সঙ্গে ৪০-৭৫ বছর বয়সের মধ্যে ৪১,৭০০-জনের উপরেও কিন্তু এই সমীক্ষা চালানো হয়। আর এই সমীক্ষার শেষে দেখা যায় সকলেই ক্যানসার, হৃদরোগ এবং স্ট্রোক থেকে মুক্ত ছিলেন।
আর এই গবেষণা চলাকালীন প্রায় ১০ হাজারের মত হৃদরোগের ঘটনা নথিভুক্ত করেছেন চিকিৎসকেরা। সেই সঙ্গে প্রতি চার বছর অন্তর মানুষের খাদ্যাভ্যাস নিয়েও সমীক্ষা চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। এমনকী যাঁদের উপর সমীক্ষা চালিয়েছেন, তাঁদের কাছে ঘন ঘন কিছু প্রশ্নও রেখেছেন। আর সেই গবেষণা শেষে দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত ভাবে রোজকার ডায়েটে অ্যাভোকাডো খেয়েছেন তাঁদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি কমেছে। এছাড়াও অ্যাভোগাডো খাওয়ার ফলে অন্যান্য আরও অনেক সমস্যাও কিন্তু দূরে থেকেছে। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে আরও যা কিছু পাওয়া গিয়েছে-
যাঁদের পরিবারে হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে এবং নিয়ম করে সপ্তাহে দুবার অ্যাভোকাডো খেয়েছেন তাঁদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কিন্তু কম। প্রায় ২১ শতাংশ। সেই সঙ্গে কমেছে স্ট্রোকের সম্ভাবনাও।
রোজকার মাংস, ডিম, দই, পনির, মাখনের পরিমাণ কমিয়ে এবং তার সঙ্গে যদি অ্যাভোগাডো দিয়ে খাওয়া হয় তাহলেও কিন্তু এই একই উপকারিতা পাওয়া যায়। আর হৃদরোগের ঘটনা কম হয় ১৬-২২ শতাংশ।
এছাড়াও রোজকার ডায়েটে শাকসবজি, অলিভ অয়েল এসবের পরিমাণ বাড়াতে হবে। রোজ ফল খাওয়া জরুরি। একমাত্র সুষম আহারই কিন্তু পারে এই হৃদরোগের সমস্যা থেকে আমাদের দূরে রাখতে।