Women & Men Crying: ৩৭ দেশের গবেষণা ঘেঁটে জানা গেল সারা বছর জুড়ে কে, কতবার চোখের জল ফেলছেন?
Male and female tears: বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়। সেখান থেকে মহিলা ও পুরুষের কান্নাকাটি করার চমকে দেওয়া তথ্য সামনে উঠে আসে।
যখনই ‘ইমোশনাল’, ‘সেনসিটিভ’, ‘আবেগপূর্ণ’ শব্দগুলো উচ্চারিত হয়, তার সঙ্গে জড়িয়ে যায় মহিলাদের নাম। যে কোনও সিনেমার দৃশ্য তুলে ধরুন, দেখবেন মহিলা চরিত্রগুলোই চোখ দিয়ে বেশি জল ফেলছে। বাস্তবেও যে এই দৃশ্যের খুব বেশি কোনও অদল-বদল হয়, তা কিন্তু নয়। বাস্তবজীবনেও মেয়েদের চোখই বেশি জলে ভরে যায়। যদিও এটা প্রমাণও করে দিয়েছে গবেষণা। গবেষকদের দাবি, একজন মহিলা বছরে ৩০ থেকে ৬৪ বার কাঁদেন। এই সংখ্যা পুরুষদের ক্ষেত্রে কত জানেন? লোকে বলে, ‘লড়কে রোতে নেহি’ বা ‘Boys Don’t Cry’। এটাই প্রমাণ করেছে আর এক গবেষণা। একজন পুরুষ বছরে ৫ থেকে ১৭ বার কাঁদেন। মহিলাদের কাছে এই সংখ্যাটা নগণ্য। তবু এটাই অবাক করে দেওয়ার মতো এক তথ্য।
‘ক্রস-কালচারাল রিসার্চ’-এ প্রকাশিত ২০১১ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, মহিলারা প্রতিবছর ৩০ থেকে ৬৪ বার কান্নাকাটি করেন, যেখানে পুরুষেরা বছরে ৫ থেকে ১৭ বার চোখের জল ফেলেন। ২০১৭ সালেও এই প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। ৩৭টি দেশের ৭ হাজার জন প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়। সেখান থেকে এই মহিলা ও পুরুষের কান্নাকাটি করার এই অনুপাত সামনে উঠে আসে।
তাহলে এখন প্রশ্ন উঠে আসছে পুরুষেরা কি মহিলাদের থেকে কম সংবেদনশীল নাকি তাঁরা অনুভূতি প্রকাশে ব্যর্থ? বিজ্ঞান বলছে, এর মধ্যে কোনওটাই নয়। পুরুষ ও মহিলাদের মানসিকতা ভিন্ন হয়। কান্নাকাটি করার ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলার শারীরিক ও মানসিক গঠনের ভিন্নতাই মূল কারণ। ১৯৬০ সালের এক গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, মহিলা ও পুরুষদের অশ্রুনালীর গঠন আলাদা। পুরুষদের অশ্রুনালীগুলির দৈর্ঘ্য ও গভীরতা বেশি। এতে তাঁদের চোখের জল চোখের পাতায় এলেও চট করে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে না। অন্যদিকে, মহিলাদের অশ্রুনালী সংকীর্ণ এবং অগভীর হয়। ফলে তাঁরা চোখের জল ধরে রাখতে পারেন না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মহিলা ও পুরুষের কান্নার এই অনুপাত জৈবিক (Biological), মনস্তাত্ত্বিক (Psychological) এবং সামাজিক তথা সাংস্কৃতিক (Socio-Cultural) বিভিন্ন কারণেও উপর নির্ভর করে। যেমন মহিলাদের মধ্যে অবসাদ, উদ্বেগে কষ্ট পাওয়ার সংখ্যা বেশি। অনেক সময় কান্নাকাটির ক্ষেত্রে ‘ফিল-গুড’ হরমোনও কাজ করে। তাছাড়া ‘লড়কে রোতে নেহি’ যেহেতু প্রায়শই শোনাই যায়, তাই পুরুষ হিসেবে চট করে প্রকাশ্যে কাঁদাকে কেন্দ্র করে রয়েছে ‘ট্যাবু’। এই ‘ট্যাবু’ আসলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজেরই নির্মাণ।
এমন অনেক প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যেখানে দেখা যায়, অল্পবয়সি ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়। সুতরাং, কোনওভাবেই বলা যায় না যে, মেয়েরা সবক্ষেত্রে পুরুষদের বেশি দুর্বল। কান্নার অনুপাতে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনই মানুষের কান্নার পিছনে ঠিক কোন-কোন কারণ দায়ী, তা অতি সহজে বলাও বেশ কঠিন।