বর্ষা মানেই ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি আর পেটখারাপের সমস্যা। মূলত আবহাওয়ার পরিবর্তন, আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি, খামখেয়ালি বৃষ্টিপাতই এর প্রধান কারণ। ঘরে-ঘরে জ্বর। এ দিকে, বাড়ছে কোভিডও। ফলে ভাইরাল ইনফেকশন আর করোনার লক্ষণ এখন প্রায় একই রকম। জ্বর-কাশির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই সময়ে বাড়ে পেটের রোগ। যেহেতু ভাল জলের সঙ্গে খারাপ জল মিশে যায়, তা-ই বর্ষাকালে পেটের অসুখ সবথেকে বেশি হয়। বর্ষাকালের সাধারণ পেটের সমস্যার মধ্যে রয়েছে আন্ত্রিক, আমাশয়, ডায়রিয়া। এছাড়াও জলবাহিত যে কোনও রোগের প্রকোপও বেশি থাকে। হেপাটাইটিস A-হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। ভাইরাল গ্যাস্ট্রোঅন্টেরাইটিস (Viral Gastroenteritis)-এর সমস্যা হয় বেশি। পেটে সংক্রমণ আর জ্বর এর প্রধান উপসর্গ।
সালমোনেলা, ই-কোলাই, শিগেলা, ব্যাসিলাস ব্যাকটেরিযার প্রকোপ বাড়ে বর্ষায়। তা-ই বর্ষায় সুস্থ থাকতে বাইরের খাবার এড়িয়ে চলারই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্ষায় বাইরের খাবার কতটা গ্রহণযোগ্য, কী-কী নিয়ম মেনে চলা জরুরি এ বিষয়ে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের সঙ্গে। বর্ষায় বারবার হাইজিন মেনে চলার উপরই বিশেষ জোর দিলেন চিকিৎসক।
বর্ষাকালে বাইরের কোন-কোন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে
তেলেভাজা, অতিরিক্ত মশলাদার খাবার , পানীয় এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল। তবে তারও আগে নজর দেওয়া জরুরি যে কোন পরিবেশে রান্না করা হচ্ছে, তার উপর। খাওয়ার জায়গা, রান্না এবং পরিবেশনের মধ্যে যদি যথেষ্ট পরিচ্ছন্নতা থাকে, তাহলে অসুবিধে নেই। বর্ষায় যাবতীয় পেটের রোগের সূত্রপাত কিন্তু নোংরা অপরিচ্ছন্নতা থেকেই।
কেন বর্ষায় বাইরের খাবার থেকে পেট খারাপ হয়?
বর্ষায় জলদূষণই এই সমস্যার প্রধান কারণ। এই সময় টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এ, বি-এর প্রকোপ বেশি থাকে। যেখান থেকে পেটের সমস্যা হয়। তবে নির্দিষ্টভাবে বলা যায় না যে এই খাবার খেলেই পেটখারাপ হয়। সবসময় গুরুত্ব দিন হাইজিনে। খাবার যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে তাহলে কোনও অসুবিধে নেই।
সাধারণ ফিল্টারের জল নাকি ফুটিয়ে রাখা জল, কোনটি বেশি নিরাপদ?
দিনে অন্তত ৪-৫ লিটার জল খান। অনেকেই বাড়িতে কেনা জল খান। কিন্তু সেই জলের সঠিক উৎস আমরা জানি না। ফলে নিরাপদে থাকতে বর্ষায় জল ফুটিয়ে খেতে পারলেই সবচাইতে ভাল।
খাওয়ার আগে হাত ধোওয়া তো জরুরি, এক্ষেত্রে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া নাকি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, কোনটি বেশি সুরক্ষিত?
হাতে যদি ধুলো, বালি লেগে থাকে সেক্ষেত্রে স্যানিটাইজারে কাজ হয় না। ধুলোতে সবচেয়ে ভাল কাজ করে সাবান। তাই সাবান দিয়ে হাত ধুতে পারলেই সবচেয়ে ভাল। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন স্যানিটাইজার।