গরমে ডিহাইড্রেশনের পাশাপাশি মহিলাদের যে সমস্যায় বেশি ভুগতে হয় তা হল ভ্যাজাইনাল ইনফেকশন (Vaginal Infection)। গরমকালে সবচেয়ে ঝামেলা তৈরি করে ঘাম। এই ঘাম থেকেই মহিলাদের যোনি অঞ্চলে চুলকানি, জ্বালা, সংক্রমণ ইত্যাদির সমস্যা বাড়ায়। এর পাশাপাশি ডিহাইড্রেট (Dehydration) শরীরও এই সংক্রমণের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই গরমকালে আপনাকে একটু বেশি সচেতন থাকতে হবে এবং শরীরের অন্যান্য অংশের পাশাপাশি গোপনাঙ্গেরও (Intimate Hygiene) খেয়াল রাখতে হবে। যেহেতু মহিলাদের যোনি অঞ্চল শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় বেশি সংবেদনশীল হয়, তাই সংক্রমণের সম্ভাবনাও এখানে বেশি। উপরন্ত লোক সমাজে হঠাৎ করে চুলকানি শুরু হলে অপ্রস্তুতে পড়তে হয়। তাছাড়া সারাদিন ধরে যদি জ্বালাভাব হতে থাকে, তখন মানসিক ভাবেও শান্তিতে থাকতে পারেন না।
যোনি অঞ্চল অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ার কারণে গরমে ঘাম জমে অনেক সময় ফুসকুড়ি, দুর্গন্ধ বের হওয়া, সংক্রমণ, জ্বালাভাব ইত্যাদি দেখা দেয়। এই অবস্থায় সঙ্গমে মিলিত হলে ভ্যাজাইনার ইনফেকশনের সমস্যা বেশি বেড়ে যায়। উপরন্ত শরীর ডিহাইড্রেট থাকলে ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশনের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। মূত্রনালীর সংক্রমণের পাশাপাশি ইস্ট সংক্রমণের ঝুঁকিও রয়েছে মহিলাদের। এই সব সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া জন্য, গরমকালে গোপনাঙ্গের বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রীষ্মকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মহিলাদের যোনি, উরু এবং এর আশেপাশের এলাকা। এর কারণ হল গরমকালে ঘামের কারণে এই সব অঙ্গে বা এর আশেপাশে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। গোপনাঙ্গে স্যাঁতস্যাঁত ভাব সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু যদি প্রথম থেকেই আপনি নিজের খেয়াল রাখেন তাহলে যে কোনও ধরনের সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব। এর জন্য পরিবর্তন আনুন লাইফস্টাইলে।
দিনে অন্তত দু’ বার করে ঠান্ডা জল দিয়ে যোনি এলাকা ধুয়ে ফেলুন। রাতে ঘুমানোর আগে এটি পরিষ্কার করা প্রয়োজন। যদি আপনি রোদ থেকে ঘেমে-নেয়ে আসেন তাহলেও এই কাজটি করুন। এর পাশাপাশি যোনি এলাকা সব সময় শুষ্ক রাখুন। যোনি অঞ্চল পরিষ্কার করতে কোনও প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করবেন না। এমনকি ক্ষার যুক্ত সাবান ব্যবহার করাও এড়িয়ে চলুন। SLS (সোডিয়াম লরিল সালফেট) মুক্ত পণ্য ব্যবহার করুন। এতে সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।
গরমে ঢিলে-ঢালা অন্তর্বাস পরুন। সুতির অন্তর্বাস পরুন। ঋতুস্রাবের সময় অন্তরাঙ্গের পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। এই সময় ৪ ঘণ্টার বেশি স্যানিটরি প্যাড ব্যবহার করবেন না। প্যাড পরিবর্তনের সময় যোনি অঞ্চলটি ভাল ভাবে পরিষ্কার করুন। জলে অ্যান্টিসেপটিক মিশিয়ে আপনি পরিষ্কার করতে পারেন। এতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণকে এড়ানো যায়।
গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত মশলাদার ও তৈলাক্ত খাবারের পাশাপাশি রসুন, পেঁয়াজ, অ্যালকোহল, চা, কফি, কোল্ড ড্রিংক জাতীয় খাবার খেলে শরীরে পিএইচ মান ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। যার কারণে গোপনাঙ্গ অর্থাৎ যোনি থেকে বেশি দুর্গন্ধ আসতে শুরু করে। তাই গরমে স্বাস্থ্যকর ও সাধারণ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এর সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। এতে ভ্যাজাইনাল ইনফেকশনের পাশাপাশি ইউটিআই-এর ঝুঁকিও কমে যাবে।
আরও পড়ুন: ৫০-এর দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছেন? প্রতিদিন আলুবোখরা খাওয়া শুরু করুন