‘Invest to End TB. Save Lives.’- এই থিমকে কেন্দ্র করেই এই বছর পালিত হচ্ছে বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস (World TB Day)। মানুষের মধ্যে যক্ষ্মা (Tuberculosis) নিয়ে সচেতনতার (Awareness) প্রচার করতেই প্রতি বছর ২৪ মার্চ বিশ্বব্যাপী যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়। আজকেও আমরা তাই-ই করব। মানুষের মধ্যে এখনও যক্ষ্মা নিয়ে বিভিন্ন ভুল ধারণা রয়েছে। সেগুলোই আজকে আমরা তুলে ধরব আপনাদের সামনে। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিসের কারণে যক্ষ্মা দেখা দেয়। এটি শুধুমাত্র ফুসফুস নয় মস্তিষ্ক, কিডনি, অন্ত্র এবং হাড়কেও প্রভাবিত করে। এর কারণ দীর্ঘক্ষণ উপবাস, ঘুমের অভাব, মানসিক চাপ এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস। কিন্তু এর পাশাপাশি মানুষের মধ্যে কিছু ভ্রান্ত ধারণাও রয়েছে, যা অবিলম্বে দূর করা জরুরি।
মিথ-১: যক্ষ্মা শুধু ফুসফুসে দেখা দেয়
ফ্যাক্ট: এই রোগটি ফুসফুস থেকে শুরু হলেও শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন কিডনি, মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডেও প্রভাব ফেলে। এর লক্ষণ এবং উপসর্গ ভিন্ন হতে পারে। ফুসফুসের বাইরে যে যক্ষ্মা হয় তাকে এক্সট্রাপালমোনারি টিউবারকুলোসিস বলে। যক্ষ্মার উপসর্গ দেখা দিলে, দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। যদি সময়মতো এই রোগের চিকিৎসা না করা হয় তাহলে এটি ফুসফুস সহ শরীরের অন্যান্য অংশে প্রভাব ফেলে।
মিথ ২: যক্ষ্মা একটি জেনেটিক রোগ
ফ্যাক্ট: অনেকেই মনে করেন যক্ষ্মা একটি জেনেটিক রোগ। কিন্তু আসল সত্য হল যে, যক্ষ্মা কোনও জেনেটিক রোগ নয় এবং এর বিস্তারের সঙ্গে আপনার জিনের কোনও সম্পর্ক নেই। যক্ষ্মা জীবনের যেকোনও সময় যে কাউকে সংক্রমিত করতে পারে। এটি মাইকোব্যাকটেরিয়াম যক্ষ্মা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার প্রয়োজন। এমনকি অল্প সময়ের মধ্যেই এটি আপনার শরীরে ক্ষতি করতে পারে।
মিথ ৩: ধূমপান না করলে যক্ষ্মা হওয়ার সম্ভাবনা নেই
ফ্যাক্ট: বেশিরভাগ মানুষ এখনও এই ভ্রান্ত ধারণার সঙ্গে বাস করেন যে, তাঁরা যদি ধূমপান না করেন তাহলে তাঁদের যক্ষ্মা হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। এই ক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে ধূমপানই যক্ষ্মা হওয়ার একমাত্র কারণ নয়। অন্যান্য কারণ যেমন এইচআইভি, ডায়াবেটিস এবং কিডনি রোগও এর জন্য সমানভাবে দায়ী। তবে ধূমপান শুধু ফুসফুস নয়, এর পাশাপাশি মস্তিষ্ক, হাড়, মেরুদণ্ড এবং চোখকেও প্রভাবিত করে।
মিথ ৪: যক্ষ্মার কোনও চিকিৎসা বা প্রতিকারের উপায় নেই
ফ্যাক্ট: আজও যক্ষ্মা সম্পর্কে মানুষের মনে একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে এই রোগের কোনও চিকিৎসা নেই। যদিও সত্যটি হল যক্ষ্মা মোকাবেলা করার জন্য প্রাথমিক রোগ নির্ণয় করা প্রয়োজন। যদি একজন ব্যক্তি সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে যান, নিয়মিত চিকিৎসা করান, ওষুধ খান তাহলে তিনি এই রোগের বিরুদ্ধে জয়লাভ করতে পারবেন। এমনকি তিনি দীর্ঘদিন যক্ষ্মা মুক্ত জীবনযাপনও করতে পারবেন।
মিথ ৫: বিসিজি-এর টিকা নিলে যক্ষ্মা হবে না
ফ্যাক্ট: জন্মের পরই এখন বিসিজি-এর টিকা শিশুদের দিয়ে দেওয়া হয়। বিসিজি-এর টিকা শিশুদের যক্ষ্মা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। যদিও, এই টিকা থেকে প্রাপ্তবয়স্করা কতটা সুরক্ষিত তা জানা যায়নি। কারণ অনেক ক্ষেত্রে বড় হয়েও যক্ষ্মার রোগে আক্রান্ত হন অনেকেই।
আরও পড়ুন: গাঁটের ব্যথায় জেরবার? আয়ুর্বেদে রয়েছে ব্যথা থেকে উপশম পাওয়ার সহজ উপায়