নয়া দিল্লি: বুধবার (২৮ অগস্ট), দশ বছর পূর্ণ হল প্রধানমন্ত্রী জন-ধন প্রকল্প (PMJDY)-র। ২০১৪ সালে, তৎকালীন এনডিএ সরকার কোটি-কোটি ভারতীয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে আর্থিক ব্যবস্থায় সামিল করতে এই প্রকল্পটি চালু করেছিল। ১০ বছর পর, এই প্রকল্পকে ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে চিহ্নিত করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেছেন, এই প্রকল্পের ফলে সঞ্চয় এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, রেমিট্যান্স, ক্রেডিট, বিমা এবং পেনশনের মতো আর্থিক পরিষেবাগুলি কোটি কোটি ভারতীয়র হাতের নাগালে এসেছে। আগে তাঁরা এই সকল সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন, চলতি বছরের ১৪ অগস্ট পর্যন্ত, ৫৩.১ কোটিরও বেশি মানুষ এই প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ৩০ কোটি হলেন মহিলা। জন ধন প্রকল্পে তাঁরা সঞ্চয় করেছেন ২.৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই প্রকল্পর দৌলতে কোটি কোটি মানুষ বিশেষ করে মহিলা, যুবক এবং প্রান্তিক সম্প্রদায় আত্মমর্যাদা পেয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এই উদ্যোগটি তাঁর কাছে শুধুমাত্র একটি নীতি ছিল না। তিনি এই প্রকল্পকে দেখেছেন, এমন এক ভারত গড়ার প্রচেষ্টা হিসেবে, আর্থিক প্রেক্ষাপট নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিকের নাগালে থাকবে ব্যাঙ্কিং সুবিধা। তিনি আরও দাবি করেছেন, আজ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকাটী খুব সাধারণ বিষয় হলেও, ২০১৪ সালে পরিস্থিতি আলাদা ছিল। প্রায় অর্ধেক দেশবাসীর কাছেই ব্যাঙ্ক পরিষেবা পাওয়া ছিল বহু দূরের স্বপ্ন। তাই তারা তাদের সঞ্চিত ধন বাড়িতেই রাখতে বাধ্য হত। ঋণ নিতে হত মহাজনদের কাছ থেকে। তৎকালীন কংগ্রেস সরকার ব্যাঙ্কগুলিকে জাতীয়করণ করার পরেও, দরিদ্ররা ব্যাঙ্কিংয়ের সুযোগ পাননি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, যখন জন ধন যোজনার সাফল্যের দুটি দিক রয়েছে। একটি সংখ্যাগত সাফল্য। ৫৩ কোটিরও বেশি মানুষ ব্যাঙ্কে ২.৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি জমা করেছেন। জন-ধনের ৬৫ শতাংশরও বেশি অ্যাকাউন্টগুলি গ্রামে বা আধা-শহর এলাকায়। প্রায় ৩৯ লক্ষ কোটি টাকা সুবিধাভোগীদের সরাসরি স্থানান্তর করেছে সরকার। তবে, দ্বিতীয় সাফল্যটি প্রধানমন্ত্রীর মতে এই সংখ্যাগত সাফল্যকেই ছাপিয়ে গিয়েছে। কি সেই সাফল্য? প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, মহিলাদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে জন ধন যোজনা ‘গেমচেঞ্জার’ হয়ে উঠেছে। প্রায় ৩০ কোটি মহিলা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার আওতায় এসেছেন। এর পাশাপাশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে কোটি কোটি এসসি, এসটি এবং ওবিসি পরিবার। উপকৃত হয়েছেন মধ্যবিত্ত ও নব্য-মধ্যবিত্তরাও।
জন ধন যোজনা, আধার এবং মোবাইল – এই ত্রয়ী মধ্যস্বত্বভোগী ও দালাদের সমস্যাও দূর করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই ত্রয়ীই ভারতে ডিজিটাল পেমেন্ট বিপ্লব এনেছে। ভারতের ডিজিটাল পেমেন্টের সাফল্যের কাহিনি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে গোটা বিশ্বের রিয়েল টাইম ডিজিটাল পেমেন্টের ৪০ শতাংশের বেশি ভারতেই হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকাতেই আয়ুষ্মান ভারত, পিএম-কিষাণ, পিএম স্বনিধির মতো সরকারের সমস্ত ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলিতে ঝঞ্ঝাট-মুক্ত এবং সরাসরি অর্থ স্থানান্তরও সম্ভব হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির সময়ের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ডজানিয়েছেন, সেই সময় সকলের কাছে ব্যাঙ্কিং-এর সুবিধা না থাকলে বিভিন্ন সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যেত না।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)