মুম্বই: বয়স্কদের করোনা (COVID) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর তাঁরা করোনা আক্রান্ত হলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসার সম্ভাবনা কম। এই ধারণাই ছড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। কিন্তু এই ধারণায় সপাটে চড় মেরে দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করলেন মহারাষ্ট্রের বৃদ্ধ দম্পতি। স্বামীর বয়স ১০৫, স্ত্রীর বয়স ৯৫। দু’জনের করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ছেলে যখন বৃদ্ধ বাবা-মাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে যাচ্ছিল, প্রতিবেশীরা বলেছিলেন, এই বয়সে করোনা জয় করে কেউ হাসপাতাল থেকে ফেরে না। কিন্তু করোনাকে হারিয়ে বাড়ি ফিরলেন দু’জনই।
১০৫ বছরের ধেনু চবন ও ৯৫ বছরের মোতাবাইর ৯ দিন কেটেছে আইসিইউতে। বিলসরাও দেশমুখ ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সে ভর্তি ছিলেন তাঁরা। চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও মনের জোরে করোনাজয়ী তাঁরা। চবন পরিবারের ৫ জনই ২৪ মার্চ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। ছেলে সুরেশ চবন দেখেন বাবা-মায়ের শারীরিক উষ্ণতা অত্যন্ত বেশি। তাই দেরি না করে হাসপাতালে ভর্তি করেন তিনি।
চিকিৎসক গজানন হলকাঞ্চের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয় শতোর্ধ্ব ধেনু চবন ও ৯৫ বছর বয়সী মোতাবাইর। বয়স একটা বড় সমস্যা, এটা জেনেবুঝেই রেমডেসিভিরের ৫ ডোজ় ও অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়েছিলেন চিকিৎসক। অদম্য মনের জোরের জেরে চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে ৫ এপ্রিল সুস্থ হয়ে ওঠেন ধেনু চবন। সে দিনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। দু’দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান মোতাবাই। চিকিৎসক হলকাঞ্চে বলেন, “একদম সঠিক সময়ে হাসপাতালে এসেছিলেন তাঁরা। আমরা চিকিৎসায় কোনও দেরি করিনি। যা তফাৎ গড়ে দিয়েছে।” তাই সকলকে উপসর্গ দেখা মাত্রই করোনা পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার অনুরোধ করেন গজাননবাবু।
সুরেশ চবন জানান, তাঁর বাবা একজন কৃষক। সারা জীবন তিনি সমাজ কল্যাণমূলক কাজ করে গিয়েছেন। জল সংরক্ষণে বড় ভূমিকা রয়েছে ধেনু চবনের। এ ছাড়াও তিনি স্কুল তৈরির জন্য নিজের জমি দান করেছেন। তাই বাবা হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফেরার পর লাগাতার শুভকামনা এসেছে বাড়িতে। তিনি বলেন, “আত্মীয়রা বলেছে ভাল কাজের জন্যই ভগবান বাবাকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠালেন।”
আরও পড়ুন: দিল্লি পৌঁছল অক্সিজেন এক্সপ্রেস, দেশে কমল মৃতের সংখ্যা