নয়া দিল্লি: ৯ দফার বৈঠকের পর ভারত ও চিন (India-China), দুই দেশই প্যাংগং (Pangong) হ্রদ থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছে। তবে প্যাংগং থেকে সেনা সরলেও দেসপাং, গোগরা নিয়ে চিন্তা কাটেনি। তাই এ বার সেই অঞ্চলগুলিতে সেনা সরানোর জন্য বৈঠকে বসেছেন দুই দেশের কম্যান্ডাররা। আজ অর্থাৎ শনিবার পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার চিনের দিকে মদডো সীমান্তে উচ্চ সামরিক পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে। এই দশম বৈঠকে দেসপাং-সহ অন্যান্য অঞ্চল থেকে সেনা সরানো নিয়ে কথা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
লকডাউনের মাঝেই জুন মাসের ১৫ তারিখ লাদাখ সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারত ও চিনের সেনা। সেই সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। প্রথমে চিনের তরফে কোনও তথ্য না প্রকাশ করা হলেও কয়েক দিন আগে চিন স্বীকার করেছে সেই সংঘর্ষে চিনা জওয়ানদের মৃত্যুর কথা। ১৫ জুন সংঘর্ষের পর একাধিক পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে ভারত-চিনের কিন্তু রফাসূত্র মেলেনি। তারপর নবম দফার বৈঠকের পর দুই দেশ রাজি হয় সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য। সেই মতোই প্যাংগং থেকে সেনা সরেছে।
দুই দেশের সেনা সরার আবহেই গালোয়ান সংঘর্ষের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছে চিন। সে দেশের সরকারি মিডিয়ার বিশ্লেষক শেন শিওয়েই একটি টুইট করে গালোয়ান সংঘর্ষের সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছেন। তবে সেখানে সংঘর্ষের জন্য তিনি দায়ি করেছেন ভারতীয় সেনাদের। প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, দুই দেশের সেনা একটি জলাশয় পেরিয়ে তীরে সম্মুখীন হচ্ছে। তারপর সেখানে হাতাহাতির দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারেও দুই সেনার সম্মুখীন হওয়ার দৃশ্য দেখা গিয়েছে ওই টুইটে। সেই আবহে দশম দফার বৈঠক দুই দেশের মধ্যে। এমতাবস্থায় বৈঠক থেকে কী সিদ্ধান্ত হয়, সেটাই দেখার।
On-site video of last June’s #GalwanValley skirmish released.
It shows how did #India’s border troops gradually trespass into Chinese side. #ChinaIndiaFaceoff pic.twitter.com/3o1eHwrIB2— Shen Shiwei沈诗伟 (@shen_shiwei) February 19, 2021
১৯৬২ সালে ভারতের বিরুদ্ধে সীমান্তযুদ্ধ জিতেছিল চিন। ১৯৬৭ সালে সিকিমের কাছে নাথু লা এবং চো লা-য় ফের ভারত-চিন সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে ভারতের ৮৮ জন জওয়ান শহিদ হন, ৩৪০ জন চিনা সেনার মৃত্যুও হয়। ১৯৬৯ সালে উসুরি নদীতে রুশ দ্বীপ দামানস্কি দখল করতে যায় চিন, সেখানে পাল্টা দেয় রাশিয়া। সেই সংঘর্ষে ২৪৮ জন ড্রাগন সেনা প্রাণ হারিয়েছিলেন। তবে উসুরি যুদ্ধে নিহত সেনাদের শহিদের মর্যাদা দেয়নি বেজিং। ১৯৭৯ সালে কম্বোডিয়া দখল নিয়ে ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধ হয় চিনের। কম্বোডিয়ায় নিহত ড্রাগন জওয়ানদেরও শহিদের স্বীকৃতি দেয়নি চিন। তবে গত বছরের লাদাখ সংঘর্ষে নিহত অফিসার ও জওয়ান মিলিয়ে ৫ জনের নাম প্রকাশ করেছে চিন।
আরও পড়ুন: লাদাখ থেকে সরছে সেনা, এ বার প্রকাশ্যে গালোয়ান সংঘর্ষের ভিডিয়ো