নয়া দিল্লি: বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪ – এক ঐতিহাসিক দিন। নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিধি জারি করার প্রায় দুই মাস পর, এদিন এই আইনের অধীনে প্রথমবারের জন্য ভারতীয় নাগরিকত্বের শংসা পেলেন ১৪ জন। নয়া আইনে, নাগরিকত্বের আবেদনের যোগ্যতার জন্য ভারতে থাকার সময়কাল ১১ বছর থেকে কমিয়ে ৫ বছর করা হয়েছে। ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বরের আগে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে যে সকল অমুসলিম উদ্বাস্তু ভারতে এসেছিলেন, তাঁরাই এই আইনের অধীনে নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারেন। এইসকল শর্ত মেনেই এই ১৪ জন ভারতীয় নাগরিকত্বের আবেদন করেছিলেন। এদিন, নয়া দিল্লিতে এই ১৪ জন আবেদনকারীর হাতে নাগরিকত্বের শংসাপত্র তুলে দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, অজয় কুমার ভাল্লা। উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া, ডাক বিভাগের সচিব, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর-সহ পদস্থ কর্তারা।
২০১৯ সালেই পাস হয়েছিল নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন। এর প্রায় ৫ বছর পর, চলতি বছরের ১১ মার্চ এই আইনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে কেন্দ্র। সিএএ- অধীনে কীভাবে নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে, কী কী নিয়ম রয়েছে, জেলা স্তরের কমিটির মাধ্যমে কীভাবে আবেদন করা যাবে, আবেদনগুলির যাচাই-বাছাই কীভাবে হবে – সব জানানো হয়েছিল। তারপর থেকেই সরকারি ওয়েবসাইটে সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্বের আবেদন করা শুরু করেছিলেন আবেদনকারীরা। এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, যাচাই-বাছাইয়ের পর, সেন্সাস অপারেশনের ডিরেক্টরের নেতৃত্বাধীন কমিটি, এই ১৪ জন আবেদনকারীকে সিএএ-র অধীনে নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০২৪ সালের নির্বাচনেও বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে সিএএ। প্রসঙ্গত, সিএএ পাস হওয়ার পরই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। সিএএ-র বিজ্ঞপ্তি জারি পরও, বিতর্ক চলছে এই আইন নিয়ে। বিরোধীদের দাবি, সিএএ আইন ভারতের সংবিধানে যে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা আছে, তার পরিপন্থী। তারা আরও বলেছে, সিএএ জারির পর এনআরসি অর্থাৎ, জাতীয় নাগরিকপঞ্জী জারি করা হবে। আর এর মাধ্যমে ভারতের মুসলিম নাগরিকদের ভিটেছাড়া করা হবে। মঙ্গলবারই, বনগাঁয় নির্বাচনী জনসভা করতে এসে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিরোধীদের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন। মতুয়া সমাজের জন্য সিএএ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিএএ-র মাধ্যমে সহজে ভারতের নাগরিকত্ব পাবে বলে আশা রয়েছে মতুয়া সমাজে। অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, সিএএ-র ফলে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। বরং, প্রতিবেশি দেশগুলিতে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। ভোটের মধ্যেই সিএএ-র অধীনে প্রথম আবেদনকারীদের নাগরিকত্ব পাওয়া, মতুয়া সমাজের ভোটদানে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।