নয়া দিল্লি: আবারও ব্যর্থ বৈঠক। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (Line of Actual Control) আশেপাশের সংঘর্ষস্থল থেকে সেনা প্রত্যাহার (Army disengagement) করা নিয়ে গত বুধবার মুখোমুখি আলোচনায় বসেছিল ভারত ও চিন (India-China Meet)। দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলার পরও মিলল না কোনও সদুত্তর। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও হট স্প্রিং থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে নারাজ চিন।
পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে ঘিরে ২০২০ সালের মে মাস থেকে বিবাদ শুরু হয়েছে ভারত ও চিনের মধ্যে। জুন মাসে গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরই দুই দেশ সেনা ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনায় রাজি হয়েছিল। এখনও অবধি ১৪টি সেনাস্তরীয় বৈঠক হলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ও তার আশেপাশের এলাকায় এখনও শান্তি ফেরেনি।
১৪তম সেনাস্তরীয় বৈঠকের প্রধান লক্ষ্যই ছিল হট স্প্রিং এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা। সূত্রের খবর, দুই দেশের মধ্যে টানা ১৩ ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে, কিন্তু তাতেও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। এর আগে প্যাংগং, গোগরা ও গালওয়ান থেকে সেনা প্রত্যাহার করলেও চিন এখনই হট স্প্রিং থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে নারাজ। অন্যদিকে, ভারত চায় সম্পূর্ণ লাদাখ থেকেই সেনা প্রত্যাহার করুক চিন। পাশাপাশি দেপস্যাং ও দেমচক, যেখানে বিগত ২১ মাস ধরে অস্থায়ী ঘাঁটি বানিয়েছে চিন, সেখান থেকেও সেনা প্রত্যাহার করা হোক।
গত ১২ জানুয়ারি লাদাখের চুসুল-মল্ডো সীমান্তে মুখোমুখি হয় দুই দেশ। সেখানে ভারত ও চিন-দুই দেশেরই প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক স্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বৈঠক নিয়ে দুই দেশের তরফে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা জুড়ে তৈরি সমস্যাগুলি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে খোলামেলা ও গভীর আলোচনা করা হয়েছে। দ্রুত যাতে এই এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়, তার জন্য দুই দেশই নিজস্ব নির্দেশিকা মেনে চলা ও সমস্যা দূর করার চেষ্টা করবে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় যাতে শান্তি বজায় থাকে, সেই চেষ্টাও করবে দুই দেশ।”
দুই দেশের সেনা বিবৃতিতে বলা হয়, “আগের বৈঠকগুলিতে যে সমঝোতায় পৌঁছনো গিয়েছিল, তা যেন বজায় রাখা হয়। লাদাখের পশ্চিমাঞ্চলে শীতের সময়ও নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে দুই দেশ। একইসঙ্গে দুই দেশ নিয়মিত যোগাযোগ রাখবে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে, যাতে বাকি সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধানসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়।”
দুই দেশের তরফেই শীঘ্রই পরবর্তী সেনাস্তরীয় বৈঠকের জন্য সহমত পোষণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবারই সেনা প্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে জানিয়েছিলেন, আংশিকভাবে সেনা প্রত্যাহার হলেও, বিপদ এখনও দূর হয়নি। তিনি বলেছিলেন, “আমরা চিনের সেনার সঙ্গে দৃঢ়, শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান খোঁজার জন্য় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনীয় যাবতীয় সুরক্ষা ব্যবস্থাও প্রস্তুত রাখা রয়েছে।”
আরও পড়ুন: Congress vs TMC: কংগ্রেস নেতারা ‘ভারত সম্রাট’ নন, জোটে জল ঢেলে কড়া বার্তা মহুয়ার