হায়দরাবাদ: মঙ্গলবার, অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দরাবাদে, সাইবারাবাদ থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ল এক বড় মাপের যৌন চক্র (massive prostitution racket busted in Hyderabad)। দেশের ১৫টি শহর এমনকী, বিদেশ থেকেও চাকরি দেওয়ার নাম করে কর্মহীন ও দরিদ্র মহিলাদের বেশ্যাবৃত্তিতে বাধ্য করত এই চক্র। ১৪,০০০-এরও বেশি মহিলা এই চক্রের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে এদিন ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়েকটি হোটেলের কর্মীও এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। বেশ্যাবৃত্তি চক্র চালানোর পাশাপাশি গ্রাহকদের মাদকের জোগানও দিত এই চক্রের সদস্যরা।
সাইবারাবাদের পুলিশ কমিশনার স্টিফেন রবীন্দ্র জানিয়েছেন, বিভিন্ন ওয়েবসাইট, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, কল সেন্টার এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করত এই চক্র। ৩৯টি মামলায় ক্ষেত্রে এই চক্রের যোগ পাওয়া গিয়েছে। ১৪,১৯০ জন মহিলা এই চক্রের শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন রাজ্যের এবং বিদেশি মহিলাদেরও নিয়ে, সারা দেশ জুড়ে এই যৌনচক্র চলত। অন্ধ্র প্রদেশ, তেলঙ্গানা, দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, অসম, নেপাল, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড এবং রাশিয়া থেকে মহিলাদের ফাঁসাত এই চক্র। দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর এবং হায়দরাবাদ থেকে কল সেন্টার চালাত তারা।
জানা গিয়েছে, এই যৌন চক্র মামলার মূল অভিযুক্তের নাম অর্ণব। সে মুম্বই এবং কলকাতা থেকে ৯১৫ জন মহিলাকে এই কাজে সামিল করেছিল। সাইবারাবাদ এলাকায় সে মাদক ও পতিতাবৃত্তির চক্র চালাত। তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ এমডিএমএ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া, সমীর নামে চক্রের আরেক সদস্য ৮৫০ জন মহিলাকে ফাঁসিয়েছিল। পুলিশ কমিশনার আরও জানিয়েছেন, এই যৌন চক্র বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে এই কাজ চালাত। এই চক্রের সঙ্গে কিছু কিছু হোটেলের কর্মীও জড়িত বল জানিয়েছে পুলিশ। তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওয়েবসাইটে যারা বুকিং করত, তাদের কাছেই মহিলাদের সরবরাহ করা হত। বেশ্যাবৃত্তি থেকে যে আয় হত, তার ৩০ শতাংশ দেওয়া হত চক্রেক শিকার হওয়া মহিলাদের। ৩৫ শতাংশ অর্থ ব্যবহার করা হত বিজ্ঞাপন এবং ওয়েবসাইটটি পরিচালনার জন্য। আরও ৩৫ শতাংশ অর্থ যেত চক্রের মাথাদের কাছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারা এবং ১৯৫৬ সালের অনৈতিক পাচার (প্রতিরোধ) আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।