নয়া দিল্লি: ১৮টি ফার্মা সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করল কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি ২৬টি ফার্মা সংস্থাকে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করা হয়েছে। ভারত থেকে জাল ওষুধ এবং খারাপ গুণমানের ওষুধ বিদেশে বিক্রি হওয়ার খবরের মধ্যেই ফার্মা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। গত কয়েক মাস ধরে উজবেকিস্তান, গাম্বিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতীয় ওষুধ রফতানিকারকদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে। এরপরই ভারতে খারাপ মানের ওষুধ তৈরির অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে নামে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন। ১৫ দিন ধরে ২০টি রাজ্যের ২০৩টি ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা পরিদর্শন করা হয়। তারপরই এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ, বিহার, দিল্লি, গোয়া, গুজরাট, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর প্রদেশ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক সূত্র জানিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ৭৬টি সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ১৮টি সংস্থার উত্পাদন লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। তিনটি সংস্থার পণ্যের লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে। আর ২৬টি সংস্থাকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসেই সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন, উত্তর প্রদেশের এক সংস্থার ওষুধের নমুনায় ভেজাল পেয়েছিল। গত ডিসেম্বরে, উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রক, ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে এই ফার্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল। ওি সংস্থার তৈরি কাশির সিরাপ খেয়ে মৃত্যু হয়েছিল উজবেকিস্তানের ১৮ শিশুর। তারপর থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে সংস্থাটি। সম্প্রতি, তাদের ২২টি ওষুধের গুণমান ঠিক নেই বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। ওই ফার্মের তিন কর্মচারীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
নয়ডার এই সংস্থার পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংস্থার বিরুদ্ধেও জাল অথবা খারাপ মানের ওষুধ তৈরি ও রফতানির অভিযোগ উঠেছে। গত মাসে, গুজরাটের এক ফার্মা সংস্থা মার্কিন বাজার থেকে ৫৫,০০০ বোতল গাউটের ওষুধ তুলে নিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে, চেন্নাইয়ের একটি ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাকে চোখের ড্রপের উৎপাদন বন্ধ করতে হয়েছে। মার্কিন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছিল, ওই চোখের ড্রপ একটি ড্রাগ-প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত হতে পারে। তা চোখে দিলে স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। ওই ড্রপ ব্যবহার করে একজনের মৃত্যুও হয়েছে বলে জানিয়েছিল আমেরিকা। গোটা বিশ্বেই ভারত ওষুধ প্রস্তুতকারক এবং রফতানিকারক হিসেবে সুপরিচিত। একের পর এক জাল ওষুধ ধরা পড়ায় ভারতের সেই সুনাম নষ্ট হতে বসেছে। এই অবস্থায় ফার্মা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করল কেন্দ্রীয় সরকার।