নয়া দিল্লি: ভগবানের আরেক রূপ বলা হয় চিকিৎসকদের। সেই কথাটি যে কতটা সত্যি তা প্রমাণ হল আরও একবার। মাঝ আকাশে ‘মিরাকল’ ঘটালেন পাঁচ চিকিৎসকের দল। মৃত্যুর মুখ থেকে পিরিয়ে আনলেন দুই বছরের এক শিশুকে। রবিবার বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লিগামী ভিস্তারা(Bengaluru-Delhi Vistara Flight)-র বিমানে সফর করছিলেন দিল্লির এইমসের ৫ চিকিৎসক। মাঝ আকাশে হঠাৎ জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে দুই বছরের এক শিশু। তাঁর নাড়ি স্পন্দনও পাওয়া যাচ্ছিল না। শিশুটির ওই অবস্থা জানতে পেরেই তৎপরতার সঙ্গে কাজ করেন। অস্ত্রোপচার করা হয় শিশুটির।
জানা গিয়েছে, বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লিগামী ভিস্তারার ইউকে-৮১৪ বিমানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে দুই বছরের শিশু। ওই বিমানেই ফিরছিলেন দিল্লির এইমসের পাঁচজন চিকিৎসক। তাঁরা বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান সোশ্যাইটি ফর ভাসকুলার অ্যান্ড ইন্টারভেনশনাল রেডিয়োলজির বৈঠক থেকে ফিরছিলেন তাঁরা। মেডিক্যাল এমার্জেন্সির ঘোষণা করতেই বিমানটি দিল্লির বদলে নাগপুরের রুটে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় জরুরি অবতরণের জন্য। মাঝ আকাশেই শিশুটির জরুরি অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। নাগরপুরে নেমে পিডিয়াট্রিশিয়ানের হাতে স্থিতিশীল অবস্থায় তুলে দেওয়া হয় শিশুটিকে।
#Always available #AIIMSParivar
While returning from ISVIR- on board Bangalore to Delhi flight today evening, in Vistara Airline flight UK-814- A distress call was announcedIt was a 2 year old cyanotic female child who was operated outside for intracardiac repair , was… pic.twitter.com/crDwb1MsFM
— AIIMS, New Delhi (@aiims_newdelhi) August 27, 2023
এইমসের তরফেও টুইট করে ঘটনাটি নিশ্চিত করা হয়েছে। টুইটে বলা হয়েছে, “ভিস্তারার বিমানে ২ বছরের একটি শিশুকন্যা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাঁর শরীর নীলচে হয়ে যাচ্ছিল। শিশুটিকে বাঁচাতে অপারেশন থিয়েটারের বাইরে ইন্টারকার্ডিয়াক রিপেয়ার অস্ত্রোপচার করা হয়।”
চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝ আকাশে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। তাঁর নাড়ি স্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না, শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছিল না। তাঁর ঠোট ও আঙুলও ধীরে ধীরে নীল হয়ে যাচ্ছিল। চিকিৎসকেরা শিশুটির অবস্থা দেখতে পেয়েই বুঝতে পারেন যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে গলায় ফুটো করে আইভি ক্যানুলা বসানো হয়। কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়, যাকে চিকিৎসকের পরিভাষায় অরোফারিনজিয়াল এয়ারওয়ে বলা হয়।
কিন্তু শিশুটি ফের একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়। ৪৫ মিনিট ধরে অটোমেটেড এক্সটার্নাল ডেফাইব্রিলেটর দিয়ে বিদ্যুতের শক দিয়ে শিশুটির হৃৎপিন্ড সচল রাখা হয়। এরপর শিশুটি স্থিতিশীল হয়। পরে নাগপুরে বিমানটি জরুরি অবতরণ করলে, শিশুটিকে পিডিয়াট্রিশিয়ানের হাতে তুলে দেওয়া হয় পরবর্তী চিকিৎসার জন্য।
মাঝ আকাশে এইমসের চিকিৎসকদের তৎপরতায় যেভাবে শিশুটির প্রাণ রক্ষা পেল, তার জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।