কানপুর: উত্তর প্রদেশে জ়িকার সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে উদ্বেগের মাঝেই গুটি গুটি পায়ে এবার জ়িকার সংক্রমণ ঢুকে পড়েছে কানপুরে। আতঙ্ক বাড়তে শুরু করে কানপুর সহ আশেপাশের এলাকাগুলিতে। এদিকে কানপুরে এখন নতুন করে ৩০ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এই নিয়ে জেলায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৬।
এই ৬৬ জন জ়িকা আক্রান্তের মধ্যে ৪৫ জন পুরুষ এবং ২১ জন মহিলা বলে জানিয়েছে স্থানীয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সম্প্রতি ৫৭ বছর বয়সি এক রোগীকে কানপুরের বায়ুসেনার হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। হাসপাতালে ভরতি হওয়ার চার – পাঁচ দিন আগে থেকেই জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। পরে হাসপাতালে ভরতি হওয়ার পর তাঁর নমুনা পরীক্ষার জন্য পুণেতে পাঠানো হলে তাঁর শরীরে জ়িকা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
ওই রোগীর এক ছেলে রয়েছে পুণেতে এবং মেয়ে থাকেন বেঙ্গালুরুতে। উত্তর প্রদেশের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকর নইপাল সিং জ়িকার সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য দুটি পৃথক দল গঠন করেছেন।
অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক সুবোধ প্রকাশের নেতৃত্বাধীন একটি দল যায় পরদেবনপুর – পোখারপুরে। সেখান থেকে ২২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় যাঁরা ওই ব্যক্তির স্ত্রী, ছেলে এবং মেয়ের সংস্পর্শে এসেছিলেন। দ্বিতীয় দলটি বায়ুসেনার হাসপাতালের ৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। যাঁদের শরীরের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেককে আপাতত আইসোলেশনে থাকার জন্য বলা হয়েছে।
কানপুরের জেলাশাসক বিশাক জি জানিয়েছিলেন, জ়িকার সংক্রমণ রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক এবং পৌর আধিকারিকদের জরুরিকালীন বৈঠকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
জ়িকা ভাইরাস নতুন নয়। ১৯৪৭-এ আফ্রিকায় প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তবে সে ভাবে বাড়বাড়ন্ত ছিল না এই ভাইরাসের। পরে ২০১৫ তে প্রথম ব্রাজিলে মহামারির আকার নেয় জ়িকা । মশা থেকে এই সংক্রমণ ছড়ায় ঠিকই তবে যৌন সংসর্গেও ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে পারে। ২০১৬-তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জ়িকা ভাইরাসকে ‘পাবলিক হেল্থ এমার্জেন্স’ তকমা দেয়। ব্রাজিলের আশেপাশে অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে জিকা। আমেরিকাতেও জিকা পৌঁছে যায়।
জ়িকার প্রথম উপসর্গ হল জ্বর। তবে জ়িকা ভাইরাস চিহ্নিত করা কঠিন। অনেকেই সাধারণ জ্বর ভেবে গুরুত্ব দেন না। এরই মধ্যে রয়েছে কোভিড। তাই জ্বর হলেই আরটি পিসিআর টেস্টের কথা ভাবেন অনেকে। তবে জ়িকায় সাধারণত যে উপসর্গগুলি দেখা যায়, সেগুলি হল, জ্বর, নাক থেকে জল পড়া, মাথা ব্যাথা, গায়ে র্যাশ। এক সপ্তাহের বেশি এই উপসর্গগুলি থাকলে জ়িকা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অনেক রোগী ক্ষেত্রে কনজাংটিভাইটিসও দেখা যায়। পেশীতে ব্যাথাও একটি উপসর্গ।
আরও পড়ুন : Delhi: নিষেধ সত্ত্বেও বাজি ফাটিয়ে দিওয়ালি উদযাপন, দিল্লিতে বায়ু দূষণ চরমে