লখনউ: সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে, শেষ পর্যন্ত সরকার গঠন করতে না পারলেও, দুর্দান্ত লড়াইয়ের ছাপ রেখেছে ইন্ডিয়া জোট। দেশ জুড়ে ২৩৪টি আসনে জয়ী হয়েছেন ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থীরা। আর ইন্ডিয়া জোটের এই ফল, বড় ভূমিকা রয়েছে উত্তর প্রদেশের। রাজ্যের ৮০ আসনের মধ্যে ৩৭টি জিতেছে সমাজবাদী পার্টি। ৬টি আসনে জিতেছে কংগ্রেস। উত্তর প্রদেশের এই চমকে দেওয়া ফলে দারুণ উৎসাহিত ইন্ডিয়া জোট। তবে, খুব শিগগিরই যোগী রাজ্যে ঘুরে যেতে পারে খেলা। সাংসদ পদ খোযাতে পারেন উত্তর প্রদেশের ইন্ডিয়া জোটের ছয়-ছয়জন প্রার্থী। কারণ, এঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে ফৌজদারি মামলা। মামলায় যদি তাঁদের দুই বা ততোধিক বছরের কারাদণ্ড হয়, সেই ক্ষেত্রে ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধি আইনের ৮ (৩) ধারা অনুযায়ী, তাঁদের অযোগ্য ঘোষণা করা হতে পারে। ঠিক যেভাবে সুরাট কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে, ২০২৩ সালে সাংসদ পদ খোয়াতে হয়েছিল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে।
ইন্ডিয়া জোটের উত্তর প্রদেশের কোন কোন সাংসদের এই ঝুঁকি রয়েছে? সবার প্রথমে নাম আসছে গাজীপুর আসন থেকে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে জয়ী সাংসদ আফজল আনসারির। একটি গ্যাংস্টার অ্যাক্ট মামলায় তাঁকে ৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। গত মাসেই সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। জুলাই মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে পারে। হাইকোর্ট যদি নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে, সেই ক্ষেত্রে সাংসদ পদ খোয়াতে হবে আনসারিকে।
আজমগড় আসন থেকে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে জয়ী ধর্মেন্দ্র যাদবের বিরুদ্ধে আবার ৪টি মামলা রয়েছে। সবগুলিরই শুনানি চলছে। একটিতেও যদি তাঁর দুই বা তার বেশি বছরের কারাদণ্ড হয়, সেই ক্ষেত্রে তাঁকে সাংসদ পদ ছাড়তে হবে।
মায়াহতী সরকারে মন্ত্রী ছিলেন বাবু সিং কুশওয়া। সেই সময়ই তাঁর বিরুদ্ধে এনআরএইচএম কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। ১০ বছরের সন্ন্যাসের পর, এবার আবার তিনি রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন। সপার টিকিটে জয়ী হয়েছেন জৌনপুর আসন থেকে। তাঁর বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৮টির ক্ষেত্রে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। কাজেই তাঁরও সাংসদ পদ হারানোর ঝুঁকি রয়েছে।
সুলতানপুর আসনে বিজেপি প্রার্থী মানেকা গান্ধীকে পরাজিত করেছেন সমাজবাদী পার্টির রামভুয়াল নিশাদ। তাঁর বিরুদ্ধে গ্যাংস্টার আইনে একটি মামলা-সহ মোট আটটি মামলা রয়েছে। দুই বছর বা তার বেশি সময়ের কারাদণ্ড হলে, তিনিও সাংসদ পদ হারাবেন।
গুরুতর ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে সপার আরও এক সাংসদ বীরেন্দ্র সিংয়ের বিরুদ্ধেও। চান্দৌলি আসনে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মনত্রী মহেন্দ্রনাথ পাণ্ডেকে হারিয়েছেন তিনি। সাংসদ পদ হারানোর ঝুঁকি রয়েছে তাঁরও।
তবে শুধু সপা সাংসদরাই নন, ঝুঁকি রয়েছে কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদেরও। সাহারানপুর লোকসভা আসন থেকে জয়ী হয়েছেন তিনি। তবে তহবিল তছরুপের এক মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দুটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছে ইডি।