নয়াদিল্লি: বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। বাড়ির বাইরে বেরোনো যায় না। আর এই বৃষ্টির জল একটি আইএএস কোচিং সেন্টারে ঢুকে মৃত্যু হয়েছে তিন পড়ুয়ার। যা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এবার এলাকার দুরবস্থার কথা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে চিঠি লিখলেন দিল্লির এক পড়ুয়া। ‘নরকে বাস করছি’ জানিয়ে পুরনিগমের আধিকারিক ও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানালেন।
অবিনাশ দুবে নামে ওই পড়ুয়া রাজেন্দ্র নগর ও মুখার্জি নগর এলাকার দুরবস্থার কথা চিঠিতে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতিকে। জল নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় এই দুই এলাকার বাসিন্দারা সমস্যা পড়েন। বৃষ্টিতে জল জমে যায়। দিল্লি পুরনিগমের উদাসীনতার জন্য এই সমস্যা বলে চিঠি উল্লেখ করেছেন তিনি। একইসঙ্গে পড়ুয়াদের মৌলিক অধিকার রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন।
শনিবার বিকেলে ভারী বৃষ্টি হয় দিল্লিতে। রাজেন্দ্র নগরে ওই কোচিং সেন্টারে বৃষ্টির জল ঢুকে যায়। সেই সময় কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে গ্রন্থাগারে পড়াশোনা করছিলেন জনা কুড়ি IAS পড়ুয়া। বাকিরা বেরোতে পারলেও তিনজন আটকে পড়েন। মৃত্যু হয় তাঁদের।
শনিবারের ঘটনার উল্লেখ করে চিঠিতে অবিনাশ লেখেন, “বৃষ্টির জেরে কোচিং সেন্টারে জল ঢুকে তিন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। মুখার্জি নগর ও রাজেন্দ্র নগরের মতো এলাকায় জল জমার সমস্যা দীর্ঘদিনের। পুরনিগমের উদাসীনতার জন্য এই সমস্যা। হাঁটু সমান জল পেরিয়ে যেতে হয়। পড়ুয়াদের এই নরকের মতো জীবন কাটিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়।” ড্রেনের জল অনেকসময় বাড়িতে ঢুকে যায় বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতিকে অবিনাশ লেখেন, “শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও নিজেদের লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে চলে পড়ুয়ারা। কিন্তু, এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল, পড়ুয়ারা সুরক্ষিত নয়। দিল্লি সরকার ও দিল্লি পুরনিগমের জন্যই এভাবে বাঁচতে হচ্ছে।” জল জমার সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিতে প্রধান বিচারপতিকে আবেদন করেন অবিনাশ। দিল্লির পড়ুয়ার এই চিঠিকে পিটিশন হিসেবে গ্রহণ করা হবে কি না, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেননি প্রধান বিচারপতি।
এদিকে, তিন পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় রাজেন্দ্র নগরে কোচিং সেন্টারের মালিক-সহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আবার এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর বেড়েই চলেছে। এই মুহূর্তে দিল্লি সরকার ও দিল্লি পুরনিগম আপের দখলে। তাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। সংসদেও এদিন দিল্লির কোচিং সেন্টারে মৃত্যুর ঘটনার কথা উঠে আসে। লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর এই নিয়ে সরব হন। আবার রাজ্যসভায় এই নিয়ে আলোচনা স্থগিত করা হয়। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় বলেন, কংগ্রেসের আপত্তিতে রাজ্যসভায় পড়ুয়া-মৃত্যু নিয়ে আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে।