বেঙ্গালুরু: শুরু হয়ে গিয়েছে বাইশ গজের মহারণ। আইপিএল শুরু হতেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বেটিং-এর রমরমা। বেঙ্গালুরুর দর্শন বাবুও টাকা ঢালতেন ক্রিকেটের বেটিংয়ে। ২০২১ সাল থেকে বেটিংয়ে টাকা লাগাচ্ছেন তিনি। একপ্রকার নেশার মতো হয়ে গিয়েছে। মোটা মোটা টাকার বাজি লাগাতেন। একবার বাজি হারলেই টান পড়ত সংসারে। তখন এঁর-ওঁর থেকে টাকা ধার করতে হত। বেটিং-এর নেশা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে অনেক বার টাকা ধার করেও বাজি লাগিয়েছেন তিনি। এতদিনে তাঁর মাথায় ১ কোটি টাকাও বেশি দেনার বোঝা চেপে রয়েছে। কিছুদিন অন্তর অন্তর পাওনাদাররা বাড়ি বয়ে এসে অপমান করে যেতেন। সে যাচ্ছেতাই অপমান। দিনের পর দিন এই অপমান আর সহ্য করতে পারছিলেন না দর্শনের স্ত্রী রঞ্জিতা। শেষে এবার চরম সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললেন তিনি। ঘরের মধ্যেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন বছর তেইশের রঞ্জিতা। গত ১৮ মার্চ কর্নাটকের চিত্রাদুর্গে বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হয় রঞ্জিতার দেহ।
পেশায় ইঞ্জিনয়ার দর্শনের সঙ্গে রঞ্জিতার বিয়ে হয়েছিল ২০২০ সালে। বিয়ের প্রথম কিছুদিন বেশ ভালভাবেই কাটে। তারপরই আস্তে আস্তে দর্শনের ক্রিকেট বেটিংয়ের নেশার কথা বুঝতে পারেন রঞ্জিতা। ২০২১ সাল থেকে বেটিংয়ের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন দর্শন। গত তিনটি মরশুমে অর্থাৎ ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা বেটিংয়ে ঢেলেছিলেন। আর তার জেরে সংসারে চরম অর্থ সংকটের মধ্যে পড়েছিলেন। জানা যাচ্ছে, বেটিংয়ের জালে সর্বস্বান্ত হওয়ার পরও এই নেশার থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি দর্শন। সব খুইয়ে, তারপরও প্রায় দেড় কোটি টাকার বেশি ধার করেছিলেন। তার মধ্যে ১ কোটি টাকা মিটিয়ে দিতে পারলেও মাথার উপর এখনও প্রায় ৮৪ লাখ টাকা দেনা চেপে ছিল।
দর্শনের শ্বশুরের অভিযোগ, এই পাহাড় প্রমাণ দেনা ও দু’দিন অন্তর অন্তর পাওনাদারদের তাগিদা, অপমান… এসবের কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন রঞ্জিতা। এরকম প্রায় ১৩ জন পাওনাদার রয়েছে বলে দাবি দর্শনের শ্বশুরের। জানা যাচ্ছে, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে। এই পাহাড় প্রমাণ দেনার জন্য কী পরিমাণ অপদস্থ হতে হত তাঁকে, সেই বিষয়ে লেখা রয়েছে ওই সুইসাইড নোটে।