নয়া দিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে আম আদমি পার্টি বা আপ (AAP)। দক্ষিণ ভারত এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে অরবিন্দ কেজরীবালের দলের কোনও উপস্থিতি না থাকা সত্ত্বেও, এই অঞ্চলগুলিতেও প্রার্থী দেবে তারা। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৪০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র চারটিতে জিততে পেরেছিল তারা। সবকটিই পঞ্জাবে। আর ২০১৯ সালে ১০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে জিতেছিল শুধুমাত্র পঞ্জাবের সঙ্গরুরে। সম্প্রতি উপনির্বাচনে জলন্ধর আসনটি তারা কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। তারপরও কেন সারা দেশে প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে আপ? আসলে কেজরীবালের দল এখন দিল্লি এবং পঞ্জাবে ক্ষমতায় রয়েছে এবং গোয়া ও গুজরাটে সীমিত হলেও তাদের উপস্থিতি রয়েছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে দেশের বাকি অংশ থেকেও সমর্থন জোগাড় করার চেষ্টা করছে তারা।
জলন্ধর লোকসভা আসনটি কংগ্রেসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপ। মঙ্গলবার (২৩ মে), সংবাদমাধ্যমকে দলের এক সিনিয়র নেতা বলেছেন, “আমরা চাই দেশের প্রতিটি প্রান্তে মানুষ আপ দলের সম্পর্কে জানুক। সেই জন্য আমরা এমন রাজ্যগুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেখানে আমাদের কোনও ক্যাডার নেই। এই রাজ্যগুলিতে প্রার্থী দিলে, আমরা অন্তত জনমানসে আমাদের দলের কথা ছড়িয়ে দিতে পারব।” তবে তারা ঠিক কোথায় কোথায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ভাবছে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি এই নেতা। দলটি কোনও নির্বাচন পূর্ববর্তী জোটে থাকবে কিনা, তাও নিশ্চিত করেননি তিনি। তিনি শুধু জানিয়েছেন, পঞ্জাবে ১৩টি লোকসভা আসনের সবকটিতেই জয়লাভ করার বিষয়ে আশাবাদী আপ। পঞ্জাব ছাড়াও দিল্লি, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে তারা প্রার্থী দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, কংগ্রেসের শক্তিক্ষয়েই আপের উত্থান ঘটেছে। তাই, তারা সম্ভবত এমন আসনগুলিতে প্রার্থী দেবে, যেখানে বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে সরাসরি লড়াই রয়েছে।
বর্তমানে দলের জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরীবাল, কেন্দ্রের এক অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় বিরোধী দলগুলির সমর্থন জোগার করার চেষ্টা করছেন। তারই মধ্যে আপের এই কৌশল সামনে এল। এই প্রসঙ্গে নিউজ৯ প্লাসকে অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার বলেছেন, “আম আদমি পার্টি এখন একটি জাতীয় দল। তারা তাদের নেতাকে জাতীয় নেতা হিসেবে তুলে ধরতে চায়। আমার মতে, সারা দেশে প্রার্থী দেওয়ার মাধ্যমে তারা ভোটারদের কাছে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাইছে যে, আম আদমি পার্টিকে বিকল্প জাতীয় দল হিসাবে লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়া উচিত। আমার মতে ২০২৪ নির্বাচনকে তারা ড্রেস রিহার্সাল হিসেবে দেখছে। তাদের লক্ষ্য ২০২৯, সেই সময়ই তারা পূর্ণ শক্তিতে ঝাঁপাবে।”