ভুবনেশ্বর: ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সরকারি প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার বা ডিবিটি (DBT) অর্থাৎ, সরাসরি তাদের অ্য়াকাউন্টে অর্থ পৌঁছে দেওয়ার উপরে জোর দিয়েছে মোদী সরকার। ডিবিটি ব্যবস্থার মাধ্যমে পেনশন প্রদান নিশ্চিত করতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছে বলে সমালোচনার মুখে পড়েছিল ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক সরকার। দিন কয়েক আগে নগদ বিতরণের পুরানো পেনশন পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওড়িশা সরকার। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি বছরের জুন মাস থেকেই নগদে পেনশন পাবেন রাজ্যের পেনশনভোগীরা। বুধবার (২৪ মে), ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ককে একটি চিঠি দিয়ে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানালেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
নবীন পট্টনায়ককে লেখা চিঠিতে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, “স্বচ্ছতা বজায় রাখার এবং দুর্নীতিকে সমূলে উৎপাটিত করার বিষয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে, আমি আপনাকে ওড়িশায় বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধীদের পেনশন প্রদানের জন্য ডিবিটি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার এবং নগদ অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছি।” ধর্মেন্দ্র প্রধানের অভিযোগ, নগদ প্রদানের ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগীদের দুর্নীতি এবং কারসাজির অনেক উদাহরণ রয়েছে। অতীতে এর জন্য ভুগতে হয়েছে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, পুরোনো পেনশন ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ‘দুর্নীতি ও অসদাচরণকে উত্সাহিত করবে’।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের অর্থ কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই দেশের প্রতিটি নাগরিকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বলে চিঠিতে জানিয়েছেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। তাঁর দাবি, ভারত সরকারের ন্যাশনাল সোশ্যাল অ্যাসিসটেন্স প্রোগ্রাম (NSAP)-এর আওতায়, কোন সমস্যা ছাড়াই ডিবিটি ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের প্রায় ২.৯৯ কোটি মানুষ কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সুবিধা পাচ্ছেন। এর মধ্যে ওড়িশার ২০,৯৫,৬৯৫ জন সুবিধাভোগীও আছেন। ডিবিটি ব্যবস্থার কারণে ভুয়ো সুবিধাভোগীদের বাদ দেওয়া গিয়েছে এবং মধ্যস্বতাকারীদের প্রয়োজনীয়তা দূর হয়েছে। আর এর ফলে, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ওড়িশা সরকার আনুমানিক ৪৫,৯৯৬ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। শুধু ওড়িশা সরকার নয়, কেন্দ্রীয় সরকারও ওই একই অর্থবর্ষে প্রায় ২.৭৩ লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে।