চণ্ডীগঢ়: পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পঞ্জাবের নির্বাচনের ওপর এবার সকলের নজর রয়েছে। সম্প্রতি সমীক্ষক সংস্থা সি-ভোটার তাদের এক সমীক্ষায় জানিয়েছিল বিধানসভা নির্বাচনে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেস ১১৭ আসনের পঞ্জাব বিধানসভায় যথাক্রমে ৩৯ ও ৩৪ শতাংশ ভোট পাবে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে কোনও দাবি না করলেও ওই সমীক্ষাতে বলা হয়েছিল ভোটের ফলে সর্ববৃহৎ দল হিসেবে আম আদমি পার্টির উত্থান হবে।
ভোট শতাংশ বেশি থাকলে ভোট বিভাজনের কারণে ১১৭ আসনে মধ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাও পেতে পারে আম আদমি পার্টি। এই ফলাফল নিঃসন্দেহে পঞ্জাবের রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছিল সমীক্ষায়। ওই সমীক্ষা ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল ২০২২ সালে দিল্লির বাইরে আম আদমি পার্টির সরকার তৈরির সম্ভাবনা প্রবল। পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল যদি সমীক্ষা সঙ্গে মিলে যায় তবে বলার অপেক্ষা রাখে না তা জাতীয় রাজনীতিতে অরবিন্দ কেজরীবালের ভাবমূর্তিকে আরও উজ্জ্বল করবে।
শহুরে ভোটারদের প্রতি কেজরীবালের আবেদন, কৃষকদের সঙ্গে তূলনামূলক ভাল সম্পর্ক এবং আমলাতন্ত্র বিরোধী কেজরীবালের ভাবমূর্তি বিজেরি বিরোধী হিসেবে কংগ্রেসের তুলনায় আম আদমি পার্টিকে এগিয়ে রাখতে পারে বলেই অনেকে মনে করছেন। এর পাশাপাশি পঞ্জাবের সাধারণ জনগণ দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে কংগ্রেস ও অকালি দলের বিকল্প একটি শক্তির সন্ধানে রয়েছেন বলেই দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
পঞ্জাবের রাজনীতিতে জাট ও শিখরা প্রাসঙ্গিক। ১৯৯৭ থেকে ২০২১ সাল অবধি বাদল ও অমরিন্দর সিংকে মুখ্যমন্ত্রী রূপে পেয়েছে পঞ্জাব। কিন্তু বর্তমানে দুই দলের কোনও নেতাই জাটদের এককাট্টা সমর্থন আদায় করতে পারা মত অবস্থায় নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। সুখবীর বাদলকে কিছু অংশ পছন্দ করে আবার কেউ কেউ ভগবন্ত মানকে পছন্দ করে। বিভিন্ন বিতর্কের কারণে নভজ্যোৎ সিং সিধুকে নিয়েও যথেষ্টই প্রশ্ন রয়েছে।
আরও একটি বিষয় যা আপকে অন্য দুটি দলের থেকে এগিয়ে রাখবে তা হল স্বচ্ছতা। আপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ বা প্রমাণ নেই। এর পাশাপাশি আম আদমি পার্টির সঙ্গে কৃষকদের সংঘাতেরও কোনও ইতিহাস নেই। মালওয়া এলাকায় আপের প্রভাব খুবই বেশি। মনে করা হচ্ছে মালওয়ার ৫৩টি আসনের মধ্যে ৪১টিতেই আপ জিততে পারে।
ক্যাপ্টেন অমরিন্দরের পর মায়াবতীর রাজনীতির ঢঙে দলিত মুখকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছে কংগ্রেস। তারা মনে করছে এরফলে একচেটিয়াভাবে তারা দলিতদের সমর্থন পাবে। দোওয়াবা ও মাঝা এলাকায় দলিতদের আধিপত্য বেশি এবং সেখানে মোট ৪৮ টি আসন রয়েছে। আপের উত্থানের আরও একটি কারণ হল দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। দলের কোন্দলের কারণের বিজেপি বিরোধী ক্ষেত্রে আপ জায়গা করে নিয়েছে বলেই মত বিশ্লেষকদের। ১০ মার্চ বোঝা যাবে আদতে পঞ্জাবের সাধারণ মানুষের মনজয়ে কতটা সফল আম আদমি পার্টি।