কলকাতা: একুশের একুশ শেষ। এ বার পাখির চোখ দিল্লি। আর সেই উদ্দেশ্যে বুধবার রাতেই দিল্লির বিমানে চেপে বসলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে সেই একই বিমানে চেপেছেন প্রশান্ত কিশোরও। সূত্রের খবর, দু’জনেই দিল্লি পৌঁছনর পর জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের পরবর্তী সময়ের নীতি নির্ধারণে মন দিতে পারেন। এর পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে বিরোধী শিবিরের বৈঠকের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তবে সূত্রের খবর, লক্ষ্মীবারে সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের দিল্লির বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমেই ‘মিশন দিল্লির’ পরিকল্পনা শুরু করবে তৃণমূল।
ঘাসফুল সূত্রে জানা যাচ্ছে, দিল্লিতে একাধিক বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে অভিষেকের। তবে তার আগে আগামিকাল সুখেন্দুশেখর রায়ের বাসভবনে একটি লাঞ্চের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে তৃণমূলের সকল সাংসদদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মুকুল রায়ও এই মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রিত। সূত্রের খবর, একুশের অনুষ্ঠানে বিরোধী ঐক্যের ডাক দেওয়ার পর যুক্তফ্রন্টে কোন কোন দলকে সঙ্গে নিয়ে এগোনো হবে, কাদের সঙ্গেই বা বৈঠক করা হবে, এই নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে আগামিকাল। তবে এই মধ্যাহ্নভোজে প্রশান্ত কিশোর উপস্থিত থাকবেন কি না, সেই বিষয়ে এখনও কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুধুই তৃণমূলের ভোটকুশলী বা নির্বাচনী পরামর্শদাতা হিসেবে বাংলায় এসেছিলেন পিকে। কিন্তু তাঁর মগজাস্ত্রের বলে ভোটে তৃণমূল যে ধরনের ফল করেছে, তারপর থেকে মমতার ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে গিয়েছেন জেডিইউ-র প্রাক্তন সহ সভাপতি। একটা সময় ছিল যখন মমতা প্রকাশ্যে প্রশান্ত কিশোরের প্রসঙ্গে কথা বলতে খুব একটা স্বচ্ছন্দ বোধ করতেন না। কিন্তু বুধবার একুশের সভামঞ্চে তৃণমূলের জয়ের অনেকটা কৃতিত্ব প্রকাশ্যেই তাঁকে দেন মমতা। এমনকী, ভাষণে একাধিকবার নানা প্রসঙ্গে ‘পিকে’-র কথাও উল্লেখ করেন। ফলে নেত্রীর মন যে পিকে জয় করে নিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই ওয়াকিবহাল মহলের। কিছুটা তাঁর ভরসাতেই যে ২০২৪ সালে বড় স্বপ্ন দেখছেন, তাও হলফ করেই বলা যায়।
এহেন পিকে অবশ্য মাসখানেক আগে থেকেই নিজের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। গত এক মাসের ব্যবধানে তিনি দু-দু’বার দেখা করেছেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গে। যে শরদ পাওয়ার বুধবার দিল্লির কন্সটিটিউশন ক্লাবে মমতার একুশের ভাষণ শুনতে উপস্থিত ছিলেন। তারপর আবার মাঝে তিনি দেখা করেছেন সনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সঙ্গে। ফলে তৃণমূলের হয়ে জাতীয় স্তরে জোটের সুতো পাকানোর কাজ যে প্রশান্ত কিশোর ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই কোনও মহলে। অভিষেকের সঙ্গেও বেশিরভাগ সময়ই তাঁর উপস্থিতি যেন খানিকটা হলেও সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। আরও পড়ুন: ‘পিএসি চেয়ারম্যান কোন মঞ্চে?’ তৃণমূলকে ‘আয়না’ দেখানোর চেষ্টা শুভেন্দুর